১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বৈরাচারমুক্ত দেশে জামায়াত এখনো বৈষম্যের শিকার : গোলাম পরওয়ার

শেয়ার করুন

 

জামায়াত নেতার মুক্তির দাবিতে খুলনায় সমাবেশ

খুলনায় আয়োজিত এক সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “আয়নাঘরসহ সকল নিষ্ঠুরতার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার ১৭ বছরের শাসনামলে দেওয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা ও রায়ের মাধ্যমে অনেকেই মুক্তি পেলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে কেন? আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে লড়াই করতেও প্রস্তুত আছি।”

তিনি বলেন, ২০১০ সালের ৩০ জুনের পর খুলনায় এটি প্রথম প্রকাশ্যে আয়োজিত জামায়াতের সমাবেশ। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ আগস্ট মুক্তি দেওয়া হলেও এটিএম আজহারুল ইসলামকে কেন এখনো বন্দি রাখা হয়েছে— এ প্রশ্নও তিনি তুলেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জামায়াত শরিক ছিল এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনার ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

মিয়া গোলাম পরওয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে “ফ্যাসিবাদের প্রতীক” আখ্যা দিয়ে বলেন, “ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে মুক্তি দিতে হলে অন্তত এটিএম আজহারের সাজা বাতিল করুন।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা মওকুফের সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবিলম্বে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হোক।” তিনি দাবি করেন, স্বৈরাচারী শাসনের ফলে জামায়াতে ইসলামী এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত

তিনি আরও বলেন, এটিএম আজহার ন্যায়বিচারের আশায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছিলেন। কিন্তু চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন তার সাজা বহাল রাখলেও একজন বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেন, যা এই রায়ের বিতর্কিত দিক তুলে ধরে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারিক কার্যক্রমগুলো আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।”

সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—

খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান

মহানগর সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম

কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন

জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম

মহানগর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল

বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির মাওলানা শেখ মো. আবু ইউসুফ

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ গাউসুল আজম হাদী

মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী

ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন

খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির

খুলনা জেলা দক্ষিণ সভাপতি আবু জার আল গিফারী

সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন বদরুজ্জামান নাবিল।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

 

শেয়ার করুন