১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ. লীগ সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠিত করেছিল

শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সর্বক্ষেত্রে ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার তিনটি আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, “মানুষের মনুষ্যত্ববোধ নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। এতটাই গভীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে মনে হয়, এটা আমাদের সমাজেরই অংশ? আমরাই এটা করলাম?”

তিনি আরও বলেন, “যারা এটার শিকার হয়েছেন, তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। তাদের কাছ থেকে শুনলাম, কীভাবে অন্যায়ভাবে তাদের বন্দি করে নির্যাতন চালানো হয়েছে। কোনো যুক্তি, ব্যাখ্যা নেই। বিনা কারণে, বিনা দোষে নিরপরাধ মানুষদের জঙ্গি বলে চিহ্নিত করে বন্দি করা হয়েছে।”

অধ্যাপক ইউনূস জানান, দেশে অসংখ্য নির্যাতন কেন্দ্র বা ‘টর্চার সেল’ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমার ধারণা ছিল আয়নাঘর কয়েকটি আছে। কিন্তু এখন শুনছি, এর বিভিন্ন সংস্করণ সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে। কেউ বলছেন ৭০০, কেউ বলছেন ৮০০। এখনো সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।”

বন্দিশালা ঘুরে এসে তিনি বলেন, “বীভৎস দৃশ্য! যা ঘটেছে, তা নৃশংস। শুনলেই মনে হয় অবিশ্বাস্য! এটা কি সত্যিই আমাদের সমাজ?”

মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “একজন ভুক্তভোগী জানালেন, তাকে ছোট্ট একটি খুপড়ির মধ্যে বছরের পর বছর বন্দি রাখা হয়েছিল। এর চেয়েও মুরগির খাঁচা বড়!”

তিনি বলেন, “সমাজকে এসব থেকে বের করে না আনলে, আমাদের সমাজ টিকবে না। অপরাধীদের বিচার করতে হবে, প্রমাণ সংরক্ষণ করতে হবে।”

গুমের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রথমত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ ও নতুন পরিবেশ গড়তে আমরা কাজ করছি। সরকারও সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে, যাতে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন—আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রমুখ।

 

শেয়ার করুন