১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা’

শেয়ার করুন

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল। অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সাবেক সরকার, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলো ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।

প্রতিবেদনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে উঠে এসেছে যে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমন করতে সরকারি পর্যায়ে একটি নীতি গৃহীত হয়েছিল। এতে সহিংস আক্রমণের নির্দেশনা ছিল, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল হতে পারে এবং এ বিষয়ে আরও গভীর তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করেছে, তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি প্রথমবারের মতো পরিচালিত হয়েছে। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে পরিকল্পিতভাবে সহিংস পন্থা ব্যবহার করা হয়েছিল।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পর। তবে এর পেছনে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দুর্নীতি ও প্রশাসনিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ ছিল, যা অর্থনৈতিক অসাম্য বাড়িয়ে তুলেছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশল, যা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জনগণের বিরোধিতা কঠোরভাবে দমন করতে চেয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “বিক্ষোভ দমনের কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সমন্বয়ে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।”

 

শেয়ার করুন