
তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় সরকারি দপ্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। সম্প্রতি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব প্রতীপ কুমার সিংয়ের স্বাক্ষর করা একটি নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারি কম্পিউটার বা অফিসের যন্ত্রে এআই-চালিত অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এসব অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি অফিসের কম্পিউটার বা অন্য কোনো সরকারি ডিভাইসে এআই-চালিত অ্যাপ ব্যবহৃত হলে, গোপনীয় তথ্য তৃতীয় পক্ষের হাতে চলে যেতে পারে। সাধারণত, এআই অ্যাপগুলো ইউজারের দেওয়া ইনপুট সংরক্ষণ করে এবং তা ভবিষ্যতে বিশ্লেষণ ও মডেল প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ নথি বা গোপনীয় ডেটা ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
শুধু ভারতই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিভিন্ন দেশেও উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারি পর্যায়ে তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া ও ইতালির মতো দেশগুলো সরকারি দপ্তরে ‘ডিপসিক’-এর মতো এআই টুল ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এদিকে, এই নির্দেশিকা জারির দিনেই ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বৈঠক করেছেন ‘ওপেনএআই’-এর সিইও স্যাম অল্টম্যানের সঙ্গে। বৈঠকে ভারতের ভবিষ্যৎ এআই নীতিমালা এবং এটি উন্নয়নের জন্য কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে একদিকে যখন ভারত সরকার এআই-নির্ভর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করছে, তখনই সরকারি দপ্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রিত ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে এআই ব্যবহারের জন্য যথাযথ নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে প্রযুক্তির সুফল পাওয়া যায়, তবে নিরাপত্তার বিষয়েও কোনো আপস না করা হয়।