
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণা
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (তারিখ) দেশটির রাজধানী অটোয়ায় নিজ বাসভবনের বাইরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
পদত্যাগের কারণ ও প্রেক্ষাপট
ট্রুডো জানান, তার দল লিবারেল পার্টি একজন নতুন নেতা নির্বাচিত করার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মূল কারণগুলো:
1. জনপ্রিয়তার হ্রাস:
অভিবাসন প্রত্যাশীদের ব্যাপক আগমনের ফলে কানাডায় আবাসন সংকট ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা ট্রুডোর জনপ্রিয়তায় ভাটার টান নিয়ে আসে।
2. নির্বাচনে ভরাডুবি:
গত অক্টোবরের প্রাদেশিক ও স্থানীয় নির্বাচনে লিবারেল পার্টি বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির কাছে বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হয়।
3. অভ্যন্তরীণ চাপ:
ডিসেম্বরে অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগ এবং দলের নেতাকর্মীদের পরামর্শে ট্রুডোকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার চাপ সৃষ্টি হয়।
ট্রুডোর রাজনৈতিক যাত্রা
প্রথমবার ক্ষমতায় আসা (২০১৫):
২০১৫ সালে লিবারেল পার্টির নেতৃত্বে জিতে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন।
অভিজ্ঞতাপূর্ণ নেতৃত্ব:
টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা কানাডার রাজনীতিতে বিরল।
জনপ্রিয়তা:
ট্রুডো তার পূর্বসূরীদের তুলনায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে কানাডার অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ট্রুডো বলেছেন, তিনি দলের নতুন নেতার ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। আগামী অক্টোবর মাসে নির্ধারিত পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে লিবারেল পার্টির একজন সদস্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের আক্ষেপ
ট্রুডো তার বিদায়ী বক্তব্যে বলেন, “আমার একটি দুঃখ রয়ে গেল, আমরা আমাদের নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে পারলাম না। বর্তমানে ব্যবস্থাটি মেরুকরণ ও বিদ্বেষ ছড়ানোর রাজনীতিকদের সহায়তা করে, যা সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।”
জাস্টিন ট্রুডোর এই পদক্ষেপ কানাডার রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে এবং নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে লিবারেল পার্টি ও দেশের রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।