
তিন দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। এই কর্মসূচির কারণে দেশের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষক ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ বন্ধ রেখেছেন।
শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়িত না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনগুলো। তারা জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশন এবং আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করা হতে পারে। এতে শিক্ষাখাতে বড় ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, সরকারের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নেবে।
শিক্ষক নেতারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার গত ১২ নভেম্বরের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় সহকারী শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। সীমিত কর্মসূচি পালনের পরও দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে গেছেন। এতে আগামী ৮ ডিসেম্বর দেশজুড়ে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১ জন। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার প্রধান শিক্ষক; বাকিরা সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৫ জন, যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ জন—যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৫৫ শতাংশ।
জানা যায়, সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে বছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা এবং ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
সিএনআই/২৫