১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনসিপির প্রার্থী তালিকায় সাবেক এমপি ও মনোনয়নবঞ্চিতরা

শেয়ার করুন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে গতি এনেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ইতোমধ্যে দলটি কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে এবং দেশজুড়ে সম্ভাব্য প্রার্থী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করেছে। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়া হচ্ছে সাক্ষাৎকার, যাতে জনপ্রিয়, সক্ষম ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাছাই করা যায়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও এনসিপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি—তারা এককভাবে না কি জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। চলতি মাসেই দলটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করবে। মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র দলীয় নেতাদের নয়, বরং সাবেক এমপি, অন্যান্য দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতা, ব্যবসায়ী, তরুণ ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তবে বিগত তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার পক্ষে অধিকাংশ নেতা।

গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি, যা চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। ১৫ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। এনসিপি সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে ১০০ থেকে ১৫০টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতে পারে, যদিও দলটি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুত।

এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুল্লাহ হায়দার জানান, ইতোমধ্যে ৬৫–৭০টি ফরম বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, “দলীয় নেতা ছাড়াও বাইরের আগ্রহীরা বেশি ফরম কিনছেন। কেউ কেউ নির্ধারিত টাকার চেয়েও বেশি দিচ্ছেন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য মনোনয়ন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।”

দলীয় সূত্র আরও জানায়, বিএনপি ও জামায়াতের মনোনয়নবঞ্চিত জনপ্রিয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে এনসিপি। অনেকে ইতিমধ্যে আগ্রহও প্রকাশ করেছেন। ছাত্রদলের সাবেক নেতারাও যোগাযোগের আওতায় আছেন বলে জানা গেছে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আমরা তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছি—জয়ী হওয়ার সক্ষমতা, ভালো ইমেজ ও সাংগঠনিক দক্ষতা। প্রাথমিক বাছাই শেষে মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য দলের মনোনয়নবঞ্চিতদের জন্যও দরজা খোলা। যাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে, তারা আগ্রহী হলে আমরা বিবেচনা করছি।”

মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন জানান, “প্রথম ধাপে ১০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা হবে। আমরা বিগত তিন নির্বাচনে অংশ নেওয়া কাউকেই মনোনয়ন দেব না। আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি সংশ্লিষ্টদের প্রতিও জিরো টলারেন্স। তবে অন্যান্য দলে মনোনয়ন না পাওয়া কিন্তু যোগ্য কেউ আগ্রহী হলে সুযোগ থাকবে।”

শুক্রবার রাজধানীর বাংলামটরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আসন্ন নির্বাচনে এনসিপির কৌশল, সম্ভাব্য জোট ও প্রচার নিয়ে আলোচনা হয়। অধিকাংশ সদস্য এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেন, যাতে দলটির স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অবস্থান প্রতিষ্ঠা পায়।

তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে, এনসিপি শেষ পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াত বা তৃতীয় জোটের (গণতন্ত্র মঞ্চ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ) সঙ্গে জোটে যেতে পারে কি না।

মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এনসিপি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। বিএনপি ও জামায়াত সংস্কার প্রক্রিয়ায় এক জায়গায় এলে এবং সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলে তাদের সঙ্গে জোট হতে পারে।”

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন