ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান, যা চলতি বছরেই রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে।
মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, “আমাদের বাদ রেখে কেউ কোনও সিদ্ধান্ত নেবে, তা আমরা চাই না… কীভাবে ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করা যায়, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত ইউক্রেন ছাড়া নেওয়া যায় না।”
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা চলতি বছরেই নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই, কারণ আমরা এই বছর যুদ্ধ শেষ করতে চাই।”
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার এই আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানো প্রসঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের উদ্বেগকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, “মস্কোর আক্রমণ এড়ানোর জন্য তিন বছর আগে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করতে পারত কিয়েভ।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “আজ আমি শুনছি, ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ঠিক আছে, কিন্তু আপনারা তিন বছর সময় পেয়েছেন। এই যুদ্ধ শেষ করা উচিত ছিল… এ নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতো।”
এছাড়া, ইউক্রেনে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি রাশিয়ার কোনো বিষয় নয়। এটি আমার এবং বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র নিয়েও কথা বলেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের সময় আমাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তা সফল হবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ছড়ানো অপতথ্যের জালে আটকা পড়েছেন।”
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন থেকে পাওয়া এক প্রস্তাব সম্পর্কেও কথা বলেন জেলেনস্কি, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ বিরল খনিজ সম্পদের অংশীদার করার কথা বলা হয়েছিল।
জেলেনস্কি জানান, “প্রস্তাবটি অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে লিথিয়াম ও টাইটানিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের মালিকানা দিতে হতো। প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, ইউক্রেনকে অন্তত ৫০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ খনিজ সম্পদের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে হবে। কিন্তু ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে কোনও উল্লেখ ছিল না, তাই আমি এটি প্রত্যাখ্যান করেছিলাম।”
