১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাহাবি আবু দারদা (রা.) যেভাবে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন

শেয়ার করুন

 

হজরত আবু দারদা (রা.) নির্জনতা পছন্দ করতেন এবং তিনি মনে করতেন যে, একজন মুসলমানের জন্য সবচেয়ে ভালো ইবাদতগাহ তার নিজ বাড়ি। সেখানে তার নফস, চোখ ও লজ্জাস্থান সর্বাধিক সংযত থাকে। তিনি বলতেন, “তোমরা বাজারের মজলিস থেকে দূরে থাকো, কারণ এসব মজলিস তোমাদের খেলা ও হাসি-তামাশার দিকে নিয়ে যায়।”

আবু দারদা (রা.) সবসময় চুপচাপ থাকতে এবং চিন্তা ও অনুধ্যানে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। একবার আউন ইবনে আব্দুল্লাহ উম্মু দারদাকে প্রশ্ন করেছিলেন, “আবু দারদার সর্বোত্তম আমল কী ছিল?” উম্মু দারদা উত্তরে বলেছিলেন, “গভীর চিন্তা ও অনুধ্যান।” তিনি আরও বলতেন, “এক ঘণ্টা চিন্তা করা সারারাত ইবাদত অপেক্ষা উত্তম।”

তিনি বলেন, “তোমরা যেমন কথা বলা শেখো, তেমনি চুপ থাকাও শেখ। কারণ, চুপ থাকা বিরাট সহনশীলতা। বলার চেয়ে শোনার প্রতি আগ্রহী হও। অহেতুক কোনো কথা বলো না।”

আবু দারদা (রা.) এর হাস্যোজ্জ্বল স্বভাব ও মৃত্যুশযায়ের উপদেশ

আবু দারদা (রা.) সবসময় হাসিমুখে থাকতেন এবং মানুষের সঙ্গে খোশ-মেজাজে মিশতেন। তাঁর ঠোঁটে হাসি ঝরতো যখন তিনি কথা বলতেন। একদিন তাঁর স্ত্রী উম্মু দারদা তাঁকে বলেছিলেন, “আপনি প্রতি কথায় মুচকি হাসি দেন, এতে মানুষ আপনাকে নির্বোধ মনে করে না?” আবু দারদা (রা.) উত্তরে বললেন, “রাসূল সা. তো কথা বলার সময় মৃদু হাসতেন।”

তাঁর স্বভাব ছিল সরল ও অনাড়ম্বর। দামেস্কের মসজিদ চত্বরে নিজ হাতে গাছ লাগাতেন। রাসূল সা.-এর সাহাবি এবং মসজিদের হালকার দরসের ইমাম হয়েও তাঁকে ছোট ছোট কাজ করতে দেখে মানুষ অবাক হয়ে যেত। একদিন একজন বিস্ময়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি নিজ হাতে এমন কাজ করেন?” তিনি উত্তর দিলেন, “এতে খুব সওয়াব।”

মৃত্যুশযায়ে উপদেশ

মৃত্যুশয্যায় তিনি সবসময় ইবাদতের প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং সবার জন্য মহানুভবতা, সহানুভূতি এবং পরোপকারের উপদেশ দিয়েছেন। তাঁর জীবন ছিল এক অনন্য উদাহরণ, যা আমাদের চুপ থাকা, চিন্তা করা এবং সঠিক পথে চলার শিক্ষা দেয়।

 

শেয়ার করুন