
যুক্তরাষ্ট্র বাজেট সংকোচনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের জন্য নির্ধারিত সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করেছে। এর আওতায় বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ভারতের জন্য বরাদ্দ ২১ মিলিয়ন ডলার-এর কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দপ্তর ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (DOGE), যা ইলন মাস্কের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের ওপর প্রভাব
ডিওজিই-এর ঘোষণায় বলা হয়েছে:
বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্ধারিত ২৯ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
ভারতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া ২১ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভারতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় উন্নতির লক্ষ্যে নেওয়া মূল প্রকল্পগুলোতে প্রভাব পড়বে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে নতুন প্রশাসন বাজেট কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিলেও কাটছাঁট করা হচ্ছে। ইলন মাস্ক এই নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, “বাজেট কাটছাঁট ছাড়া চলতে থাকলে আমেরিকা দেউলিয়া হয়ে যাবে।”
বিশ্বজুড়ে আরও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত
বাংলাদেশ ও ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য দেশেও সহায়তা বাতিলের প্রভাব পড়বে। এর মধ্যে রয়েছে:
মোজাম্বিক – ১০ মিলিয়ন ডলার
কম্বোডিয়া – ২.৩ মিলিয়ন ডলার
সার্বিয়া – ১৪ মিলিয়ন ডলার
মলদোভা – ২২ মিলিয়ন ডলার
নেপাল – দুটি প্রকল্পে ৩৯ মিলিয়ন ডলার
মালি – ১৪ মিলিয়ন ডলার
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কয়েকদিন পরই ভারতের সহায়তা বাতিলের ঘোষণা আসে। যদিও বৈঠকের পর দুই নেতা মার্কিন-ভারত সম্পর্ক শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে, এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কাজ করছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনো বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে এটি উভয় দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।