
সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষকরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়েছেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন—
‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’
‘হয়তো মোদের যোগদান দিন, নয়তো মোদের জীবন দিন’
‘থাকার কথা বিদ্যালয়ে, আমরা কেন রাজপথে?’
‘এক নিয়োগে দুই নীতি, মানি না মানবো না’
‘এক দফা এক দাবি, চাকরি নিয়ে ফিরব বাড়ি’
‘যোগদান নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’
‘তোদের রায় তোরা নে, আমার চাকরি ফেরত দে’
‘অবৈধ এই রায়, মানি না মানব না’
‘অধিদপ্তর নীরব কেন, প্রশাসন জবাব চাই’
সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক রাকিব সিদ্দিকী বলেন, “যত বাধাই আসুক, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। ন্যায্য দাবি আদায়েই আমরা এখানে এসেছি।”
এর আগে গতকালও শিক্ষকরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়। তখন বেশ কয়েকজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
তৃতীয় ধাপের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩-এর বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে প্রকাশ করা হয়। ১ম ও ২য় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগসহ অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ৩য় ধাপ নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি।
সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ইতোমধ্যে জেলা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরমও জমা দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রায় সব জেলার সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা যোগদানপত্র হাতে পেয়েছেন। তবুও তারা এখনো চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না, ফলে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।
অনেকে সরকারি চাকরি ছেড়ে এই নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন। শিক্ষকরা দাবি করেছেন, “এই পরিস্থিতির জন্য আমরা দায়ী নই। তাই হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আমাদের দ্রুত যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে।”
পেছনের ঘটনা
গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ হাজার ৫৩১ জন সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করেন এবং মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দেন। এর আগে, গত বছরের ১৯ নভেম্বর আদালত এই নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
l