১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুতিনের দুই শর্ত মানলেই বন্ধ হবে ইউক্রেন যুদ্ধ

শেয়ার করুন

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শর্ত মেনে নিতে হবে বলে জানিয়েছে মস্কো। রাশিয়া বলছে, শান্তি আলোচনার জন্য এ শর্তগুলো পূরণ করা ‘অপরিহার্য’।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক আলোচনা প্রসঙ্গে রাশিয়ার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য প্রকাশ করে।

শান্তির পূর্বশর্ত

মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন গত বছর যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছিলেন, সেগুলোই এখনো আলোচনা শুরুর শর্ত হিসেবে বহাল রয়েছে। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,

“আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি যে পুতিনের শর্তগুলো পূরণ না হলে ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়। যত দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ বিষয়টি উপলব্ধি করবে, তত দ্রুত প্রত্যাশিত রাজনৈতিক সমাধান পাওয়া সম্ভব হবে।”

পুতিনের শর্ত

গত বছরের ১৪ জুন দেওয়া এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট পুতিন দুটি প্রধান শর্ত উত্থাপন করেন—

1. ন্যাটোর সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান: ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে এবং ভবিষ্যতে ন্যাটোর সদস্য না হওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

2. অধিকৃত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার: ইউক্রেনকে চারটি অঞ্চল—ডোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন থেকে তাদের সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে হবে, যেগুলো রাশিয়া দখল করেছে।

 

কিয়েভের প্রতিক্রিয়া

ইউক্রেন এই শর্তগুলোকে ‘পূর্ণ আত্মসমর্পণের শামিল’ বলে উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিয়েভের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা ন্যাটোতে যোগদানের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাশিয়ার দখলে যাওয়া ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় ফিরলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে, তার ফিরে আসার পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্প জানান, আলোচনা কিছুটা এগিয়েছে, তবে সংকট সমাধানের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলেননি।

ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার শর্ত মেনে নেওয়া ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে পশ্চিমা সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাও কিয়েভের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চললেও দুই পক্ষের মধ্যে স্থায়ী সমাধান আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

 

শেয়ার করুন