
ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম ঠেকাতে কূটনৈতিক তৎপরতা
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইছে, শেখ হাসিনা যেন ভারতে থেকে কোনো বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে না পারেন। এ উদ্দেশ্যে আগামী ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ওমানের মাস্কাটে অনুষ্ঠেয় ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্প্রতি ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য প্রচার করলে বাংলাদেশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে শেখ পরিবারের সম্পত্তি ধ্বংস, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানায়। এ পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধে কূটনৈতিকভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাস্কাটে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে ভারতের প্রতি বার্তা দেওয়া হবে যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। একই সঙ্গে ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা যেন বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
বাংলাদেশ চায়, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি তাকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত দেওয়া হোক। এছাড়া বৈঠকে সীমান্ত পরিস্থিতি, ভিসা নীতি, তিস্তা ও গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নসহ দ্বিপাক্ষিক নানা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন। পাশাপাশি সম্মেলনে অংশ নেওয়া অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।