
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলমান সংঘাতের অবসানে হামাস ও দখলদার ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার। তবে চুক্তির পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যদিও মধ্যস্থতাকারীরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশেক বলেছেন, দোহায় হওয়া এই চুক্তিতে ফিলিস্তিনি পক্ষের সমস্ত শর্ত পূরণ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অধিকার এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি।
গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজার ওপর লাগাতার বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজারো ভবন ধ্বংস হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও আইনি পদক্ষেপ
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চুক্তি এগিয়ে নিতে সহায়তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তবে ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানালেও ইসরায়েল এই ভূখণ্ডে তার হামলা অব্যাহত রেখেছে। গাজার জনগণ এখনো মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে।