
‘ভারতীয় মৎস্যজীবীদের লাঠি দিয়ে মেরেছে বাংলাদেশ’—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ভিত্তিহীন: কারা অধিদপ্তর
বাংলাদেশের কারা অধিদপ্তর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। আজ (মঙ্গলবার) কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. জান্নাত-উল-ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রতি কারা অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ওপর বাংলাদেশে লাঠিচার্জ করা হয়েছে, তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং সুচিকিৎসা দেওয়া হয়নি। কারা অধিদপ্তর এই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আখ্যা দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা কারাগার থেকে ৩১ জন এবং বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে ৬৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি প্রদানের সময় ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কারাগার থেকে হস্তান্তরের সময় তাদের কোনো ধরনের নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বন্দিদের সুস্থতার বিষয়টি সহকারী সার্জনের সনদ দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বন্দিদের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত
বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের যথাযথভাবে শীতবস্ত্র এবং প্রয়োজনীয় পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের ‘নিউজবাংলা’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে একজন মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি জানান, কারাগারে তাদের কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।
বাংলাদেশের কারাগারে মানবিক আচরণ
কারা অধিদপ্তর উল্লেখ করে, বাংলাদেশ কারাগারে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব বন্দিকে সমান আচরণ করা হয়। বিদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রেও বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। ধর্মীয় উৎসব পালনের ক্ষেত্রে বন্দিদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয় এবং বিশেষ দিনগুলোতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকে।
কারা অধিদপ্তরের প্রতিবাদ
কারা অধিদপ্তর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং বলেছে, এ ধরনের অসত্য ও সংবেদনশীল অভিযোগ উত্থাপন করা উচিত নয়। এমন ভিত্তিহীন বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তারা আশা প্রকাশ করেছে যে ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সংবেদনশীল বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার আগে তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করবেন।