১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢামেকে ১৬ মরদেহ, শনাক্তে এলেন ১৭ পরিবার

শেয়ার করুন

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মরদেহ শনাক্তে দৌড়ঝাঁপ চলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও মরদেহ খুঁজতে ঢামেক মর্গে এসেছেন অন্তত ১৭টি পরিবার।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে ঢামেক মর্গে নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নিহত হিসেবে দাবি করা ব্যক্তিরা হলেন—মো. আল মামুন (৩৯), মো. নূরে আলম সরকার (২৩), ফারজানা আক্তার (১৫), নার্গিস আক্তার (১৮), খালিদ হাসান সাব্বির (২৯), আব্দুল আলিম (১৪), রবিউল ইসলাম রবিন (২০), মাহিয়া আক্তার (১৪), জয় মিয়া (২০), মাজিয়া সুলতানা (১৮), আসমা আক্তার (১৩), সানোয়ার হোসেন (২২), মুনা আক্তার (১৬), মৌসুমী খাতুন (২২), মুক্তা (৩৬), তোফায়েল আহমেদ (১৮) ও নাজমুল ইসলাম রিয়াজ (৩৮)।

রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান লস্কর জানান, “এ পর্যন্ত আমরা ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করেছি। ১৬টি মরদেহের মধ্যে ছয়টির সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে স্বজনদের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে শনাক্তকরণের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।”

এদিকে, রূপনগরের কেমিক্যাল গোডাউন ও গার্মেন্টসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ২৮ ঘণ্টার চেষ্টার পর। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনটিতে একাধিক দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ ও নিরাপত্তার ঘাটতি থাকায় আগুন নেভাতে সময় লেগেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগুন লাগার সময় ভবনে প্রায় ৩০-৩৫ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। অনেকে আগুন থেকে বাঁচতে জানালা দিয়ে ঝাঁপ দেন, কেউ কেউ ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যান। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন একই পরিবারের সদস্যও রয়েছেন।

আইন ও ন্যায়বিচারবিষয়ক সংস্থা আইপিডি (ইনস্টিটিউট অব পলিসি ডেভেলপমেন্ট) বলেছে, “এ ধরনের আগুন কেবল দুর্ঘটনা নয়, বরং কাঠামোগত ও গাফিলতিজনিত হত্যাকাণ্ড।” সংস্থার মতে, রাজধানীর বহু শিল্প ও গুদাম এলাকায় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে।

ঢামেক হাসপাতালের মর্গে স্বজনরা প্রিয়জনের মরদেহ শনাক্তে অপেক্ষা করছেন। অনেকেই জানেন না, তাঁদের প্রিয়জন জীবিত না মৃত। হাসপাতালে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবনটি সম্পূর্ণ নিরাপদ না হওয়ায় এখনও ভেতরে প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে কি না, তা নিশ্চিত হতে সময় লাগবে।

সরকারিভাবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ নিখোঁজদের তালিকায় আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন