
-বহুল আলোচিত সাংবাদিক মুন্নী সাহার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি ব্যাংক হিসাবে গত কয়েক বছরে ১৩৪ কোটি টাকা জমা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই হিসাব থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।
আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আলোচিত ব্যাংক হিসাবটি শনাক্ত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুসারে, এম/এস প্রমোশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে আলোচিত লেনদেন হয়েছে। তবে সম্প্রতি বিএফআইইউ হিসাবটি জব্দ করেছে। তাতে ১৪ কোটি টাকা আটকে গেছে। এই টাকা তারা তুলে নিতে পারেননি।
মুন্নী সাহা গণঅভ্যুত্থানে বিতারিত আওয়ামীলীগ সরকারের একজন সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত। ধারণা করা হয়, তৎকালীন সরকার, বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বৈধ-অবৈধ উপায়ে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট সংঘটিত রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর গত ৬ অক্টোবর বিএফআইইউ মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব করে। এতে আলোচিত ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ ও অস্বাভাবিক লেনদেন চিহ্নিত হলে বিএফআইইউ সেটি জব্দ করে।
আলোচিত ব্যাংক হিসাবটি বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায়। যে প্রতিষ্ঠানের নামে হিসাবটি খোলা হয়েছে, সে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হচ্ছেন কবির হোসেন তাপস। এটি মূলত বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত। হিসাবটিতে মুন্নী সাহাকে উত্তরাধিকারী (nominee) হিসেবে দেখানো হয়েছে।
মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটিতে অস্বাভাবিক পরিমাণ অর্থই শুধু লেনদেন হয়নি, এর বিরুদ্ধে ঋণ নিয়ে নয়ছয় করারও অভিযোগ আছে। জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের জুন মাসে ওয়ান ব্যাংক থেকে ১৮ কোটি টাকা ঋণ নেয়। ঋণ নেওয়ার কিছুদিন পরই কিস্তি পরিশোধে অনিয়ম শুরু হয়। দেড় বছরের মাথায় প্রতিষ্ঠানটি খেলাপী হয়ে পড়ে। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ও নিজের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে একাধিক দফায় ওই ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়।
মুন্নি সাহা টেলিভিশন সাংবাদিক ও টকশো সঞ্চালক হিসেবে অতি পরিচিত। তিনি আজকের কাগজ ও ভোরের কাগজে দীর্ঘ সময় কাজ করার পর একুশে টেলিভিশনে যোগ দেন। এরপর যান এটিএন বাংলায়। সেখান থেকে এটিএন নিউজে যোগ দেন তিনি। ২০২৩ সালের ৩১ মে তিনি এটিএন নিউজ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ‘এক টাকার খবর’ নামে একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহতের মামলায় আসামি মুন্নী সাহা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর মুন্নী সাহা অনেকটা আত্মগোপনে ছিলেন। এর মধ্যে গত ৩০ নভেম্বর তিনি কারওয়ানবাজার এলে জনতার বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন। তারা তাকে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় তিনি ‘ভয়ে অসুস্থ’ হয়ে পড়লে পুলিশ তাকে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।-