১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার নিয়ে সমালোচনায় ডা. জাহাঙ্গীর কবির

শেয়ার করুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে ফের নতুন বিতর্ক উঠেছে। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ—এফসিপিএস (চূড়ান্ত) ডিগ্রি সম্পন্ন না করেও নামের পাশে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন ছাড়া আরও চারটি ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, ডা. জাহাঙ্গীর কবিরকে ইতিমধ্যে দুটি শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ নোটিশে বলা হয়, “আপনি এফসিপিএস ডিগ্রি সম্পন্ন না করেও নামের পাশে ডিগ্রি লিখে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, যা কাউন্সিল আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

এ বিষয়ে বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেন বলেন, “আগেও তাকে শোকজ করা হয়েছিল। তিনি যেসব ডিগ্রি অর্জন করেননি, তা ব্যবহার করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। নোটিশ আমরা পাঠিয়েছি, এখন তার কাছে পৌঁছানোর কথা।”

নিজের ফেসবুকে ডা. জাহাঙ্গীর লিখেছেন, “আমি শুধু এমবিবিএস, অন্য কোনো ডিগ্রি ব্যবহার করি না। হয়তো কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।”

তবে গোপন নোটিশটি প্রকাশ হওয়ার পর চিকিৎসক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেক চিকিৎসক সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনা করেন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা. মঈনুল ইসলাম মন্তব্য করেন, “কিটোবাবা বিপদে।” আরেক চিকিৎসক ডা. আমিনুল ইসলাম লেখেন, “সন্তোষজনক জবাব না দিলে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করা উচিত।”

এর আগে ২০২১ সালে প্রেসক্রিপশনে অনুমোদনহীন চারটি বিদেশি ডিপ্লোমা ব্যবহার করায় তাকে শোকজ করেছিল বিএমডিসি। এসব কোর্সের কোনোটি বাংলাদেশে নিবন্ধিত নয় বলে জানায় সংস্থাটি।

চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিজ (এফডিএসআর) এক বিবৃতিতে ডা. জাহাঙ্গীরের কর্মকাণ্ডকে “অবৈজ্ঞানিক, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” বলে মন্তব্য করেছে। তারা বলেন, “তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের নীতির পরিপন্থী বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।”

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের পরিচালিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিদফতর।

ডা. জাহাঙ্গীর কিটো ডায়েট, ওজন কমানো ও জীবনধারা পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে অনলাইনে জনপ্রিয়তা পান। তবে করোনা মহামারির সময় ভ্যাকসিনবিরোধী বক্তব্য ও অননুমোদিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচারের কারণে বারবার সমালোচিত হন তিনি।

তার বিরুদ্ধে এখন ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার, অনুমোদনহীন চিকিৎসা কার্যক্রম এবং অপচিকিৎসার অভিযোগে তদন্ত চলছে বলে বিএমডিসি সূত্রে জানা গেছে।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন