১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালী সোনাইমুড়ীতে ২৮ অক্টোবরের আলোচনা সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

শেয়ার করুন

ইয়াছিন আরাফাত (জেলা প্রতিনিধি): ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ধ্বসের পথ উন্মুক্ত করা হয়েছিলো বলে মন্তব্য করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধাণ বক্তা নোয়াখীলী ১আসনের জামায়াতে ইসলামীর মননীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ্য মাওলানা সাইফুল্লা

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন প্রধান অতিথি জামায়াত ইসলামী মনোনীত নোয়াখালী-২ সেনবাগ- সোনাইমুড়ি আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী-১ আসনের জামায়েত মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা ছাইফ উল্লাহ, পৌরসভা সেক্রেটারি ফজলুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী সোনাইমুড়ি উপজেলা শাখার আমির,৩ নং চাষিরা ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জননেতা হানিফ মোল্লা, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সোনাইমুড়ি উপজেলা শাখার নায়েবে আমির রহিমুল্লাহ বিএসসি, পৌরসভা আমির আব্দুল মতিন, জননেতা হিফজুর রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন,উপজেলা ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা নাঈম উদ্দিন, পৌরসভার সুরাও কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ আনিসুর রহমান, অ্যাডভোকেট ইদ্রিস মোল্লা, প্রমুখ

অধ্যক্ষ্য সাইফুল্লা বলেন, ২৮ অক্টোবরের হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে আওয়ামী-বাকশালীরা দেশে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছিলো। সেদিন ছিলো ৪ দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ পূর্তির দিন। সংবিধান অনুযায়ি একটি নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার গঠনের মাধ্যমে সে সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু অতি তুচ্ছ অজুহাতে আওয়ামী সাংবিধানিক সে সরকারকে মেনে নিতে রাজী হয়নি বরং কথিত আন্দোলনের নামে সারাদেশেই এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলো। পরে বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল সংকট নিরসনে দফায় দফায় বৈঠক করে কোন সমাধানে উপনীত হতে পারেননি। এটা ছিলো সে সময়ের দেশের বৃহত্তম দু’দলের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। ফলে ২৮ অক্টোবর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তারপরও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হয়। কিন্তু আওয়ামী নৈরাজ্য থেমে থাকে নি। এক সময় সরকারের উপদেষ্টারা পদত্যাগ করা শুরু করেন। সে সুযোগেই ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনরা ১/১১-অভ্যুত্থান ঘটাতে সক্ষম হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নোয়াখালী সেনবাগ ২আসনের অধ্যক্ষ্য মাওঃ সাঈদ আহমমেদ তার বক্তব্যে বলেন,১/১১ কথিত জরুরি সরকারের কোন সাংবিধানিক ভিত্তি ছিলো না বরং সে সরকার অদ্ভুত প্রকৃতির বেআইনী সরকার। এ সরকারের কাজই ছিলো আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন। তিনি ২৮ আক্টোবরের কথা আবারো স্মরণ করে বলেন, মূলত, পল্টন হত্যাযজ্ঞ নিছক কোন হত্যাকাণ্ড ছিলো না বরং তা ছিলো দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। সেদিন খুনীরা শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং লাশের ওপর নৃত্য করে দানবীয় উল্লাসে মেতে ওঠেছিলো। আইয়্যামে জাহেলিয়াতে এ ধরনের নির্মমতা লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের দ্বারাই তা সম্ভব হয়েছিলো। দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও এসব খুনীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি। তিনি ২৮ অক্টোবরের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ারার দরবারে দোওয়া করেন।

সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত সাহাব উদ্দিন বলেন, ২৮ অক্টোবরের খুনীরা প্রকাশ্য রাজপথে মানুষ হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং লাশের ওপর দানবীয় মাতম চালিয়েছে। শহীদরা জীবন দিয়েছেন কিন্তু বাতিলের কাছে মাথা নত করেন নি। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলনের ভিত্তি প্রস্তর হয়েছিলো। ২০২৪ সালে আবু সাঈদ এবং মুদ্ধের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পেয়েছে। তাই ২৮ অক্টোবরের চেতনায় পরিপূর্ণ বিজয় অর্জনের জন্য আসন্ন নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীদের বিজয়ী করার বিকল্প নেই। তিনি দাঁড়িপাল্লার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ৩নং চাষীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত ইসলামীর মননীত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হানিফ মোল্লাহ বলেন, পল্টন শহীদরা আমাদেরকে জীবন দিতে শিখিয়েছে। তাই আমাদের জন্য হতাশার কিছু নেই বরং শহীদি তামান্না নিয়েই আগামী দিনে নিজের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সকলকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।

শেয়ার করুন