
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দাতা দেশ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কোনো সংশয় নেই। এ ছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে কূটনীতিকদেরও কোনো চাপ নেই।
নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে পর্যবেক্ষকদের নির্বাচনে সহায়তা দিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারাই পর্যবেক্ষকদের হ্যান্ডেল করবে। কাজেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরাসরি এখানে কোনো অংশগ্রহণ নেই। ভিসা লাগলে আমরা দেব। তবে যারা আসতে চান, তারা সাধারণত নির্বাচনের আগে সফরে আসেন। এখন পর্যন্ত প্রাথমিক সফর কিছু হয়েও গেছে। সর্বশেষ আইআরআইয়ের প্রতিনিধিদল এসেছিল। তারা আবারও আসবে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাজেই যারা পর্যবেক্ষক হিসেবে আসতে চান, আমরা অবশ্যই তাদের উৎসাহিত করব। আমরা এ পর্যন্ত দেখেছি ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী। আমরা মনে করি, এটি একটি ভালো লক্ষণ। সময় কাছাকাছি এলে হয়তো আরও পর্যবেক্ষক আসবেন। আমরা চাই, নির্বাচন স্বচ্ছভাবে সবার সামনে প্রদর্শিত হোক।’
সম্প্রতি দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) এর সদস্যদের মতবিনিময় প্রসঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ডিকাব সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা দিল্লি গিয়েছিলেন, তাদের বিষয়ে আমার একটা পর্যবেক্ষণ আছে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আপনাদের মুখে একটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভারত বাংলাদেশে আগামীতে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। তখন আপনাদের বলা উচিত ছিল গত ১৫ বছরে ভারত কেন এ প্রশ্ন তোলেনি? আগের নির্বাচনগুলো কি সঠিক ছিল? ভারতের পররাষ্ট্রসচিব নিজে থেকেই এ সুযোগটি দিয়েছিলেন। কিন্তু আপনারা প্রশ্নটি করেননি।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে বিক্রম মিশ্রি ডিকাব সদস্যদের জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারত আইনি দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আইনি দিক পালন করেই শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছি। ভারত কোনো জবাব দেয়নি। তারা তাদের দিক থেকে দেখতে থাকুক।’
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইসের পরিবর্তে নতুন যিনি বাংলাদেশের জন্য মনোনীত হয়েছেন, তাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটুকু আপনাদের বলতে পারি, বাংলাদেশে সমস্যা সৃষ্টি হয়, এমন কেউ এখানে আসবেন না। এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলতে চাই না।’
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা তৃতীয় কোনো দেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা তৃতীয় কোনো দেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেক বড় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ বড় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রেখে চলছে।’
ইসলামি বক্তা জাকির নায়েক বাংলাদেশে আসছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘জাকির নায়েককে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কি না, সেটি আমি শুনিনি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’