১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসন নিশ্চিততা চায় বিএনপির মিত্ররা নির্বাচনের আগে

শেয়ার করুন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দলগুলো দ্রুত নিজেদের আসনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা চাইছে। তাদের দাবি, এখনই আসন বণ্টন স্পষ্ট হলে মাঠে পূর্ণ উদ্যমে কাজ করা যাবে এবং বিএনপির নেতাকর্মীরাও সহযোগিতা করবেন।

তবে এখন পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ মিত্রদলকে আসন নিশ্চয়তা দেয়নি বিএনপি। যদিও বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী বেশিরভাগ দলই ইতোমধ্যে প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে। এই তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে দলের নীতিনির্ধারকদের হাতে, যেখানে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)–এর নতুন বিধান, যা অনুযায়ী জোট থাকলেও প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে।

সূত্র জানায়, মিত্রদের দেওয়া ১০৩ জনের প্রার্থী তালিকা এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লন্ডনে রয়েছে। তিনি প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা, ও প্রতিদ্বন্দ্বী পরিস্থিতি যাচাই করছেন। বিএনপি ইতোমধ্যে ২০০ আসনে নিজস্ব প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও প্রায় শেষ করেছে।

১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম, এনডিএম, লেবার পার্টি, বিজেপি ও বিপিপি মিলিয়ে বিএনপির কাছে এখন পর্যন্ত ১০৩ প্রার্থীর তালিকা জমা পড়েছে। আরও তালিকা জমা দিতে যাচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণঅধিকার পরিষদ, যারা যথাক্রমে ৫০ ও ৩০ জন প্রার্থীর নাম দেবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী আমাদের আরও পর্যালোচনা দরকার। জোটের প্রার্থীদের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোট শরিকদের জন্য ৫৯টি আসন ছেড়েছিল—এর মধ্যে জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটকে ৪০টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন—জামায়াত কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকলেও তারা আলাদা জোট গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিও বড় পরিসরের নতুন জোটের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।

দলীয় সূত্র বলছে, এবার শরিকদের জন্য আসন ছাড়ের সংখ্যা থাকবে প্রায় ৫০টির মতো, তবে জোটের পরিসর বড় হলে সেটি আরও বাড়তে পারে। যেখানে মিত্র দলের প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী ও জনপ্রিয়, সেখানে তাদের অগ্রাধিকার দেবে বিএনপি।

জোটের নেতারা বলছেন, বিএনপি এখনও স্থানীয় পর্যায়ে প্রার্থীদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি, ফলে মাঠ পর্যায়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
১২ দলীয় জোটের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “বিএনপি যত দ্রুত মিত্রদের প্রার্থিতা নিশ্চিত করবে, তত দ্রুত আমরা মাঠে কাজ শুরু করতে পারব। দেরি হলে প্রস্তুতিতে ক্ষতি হবে।”

সব মিলিয়ে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার আগেই বিএনপি জোটের আসনবণ্টন চূড়ান্ত করতে চায়—যাতে নির্বাচনের মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে নামা যায় এবং বিরোধী জোটের অবস্থান স্পষ্ট হয়।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন