১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার
৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত করি”

শেয়ার করুন

ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ প্রতিনিধি : বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের শহরগুলো বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় শহরগুলোতে যানজট ও দূষণ একটা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে হাজার হাজার কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হল ব্যক্তিগত গাড়ীর আধিক্য। বর্তমানে মাত্র ৫ শতাংশ ব্যক্তিগত গাড়ী ৭০ শতাংশ রাস্তা দখল করে আছে। বিগত কয়েক বছর ঢাকা একটানা ৯ দিন বায়ু দূষণের শীর্ষে অবস্থান করেছে। একইভাবে শব্দ দূষণেও ঢাকা বিশ্বে প্রথম ১০টি দেশের মাঝে অবস্থান করেছে। এইসব দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে নারী, শিশু এবং বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিরা।

আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৩:০০ ঘটিকায় ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথভাবে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটির ০৪ নং সড়কে “সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত করি” এই আহব্বান জানিয়ে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস (ডড়ৎষফ ঈধৎভৎবব উধু) ২০২৫ উদযাপন করে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও গাড়িমুক্ত দিবসে নানা ধরনের আয়োজন করা হয়। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য ছিল বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খেলার প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন ধরনের খেলার পেইন্টিং এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন।

গাউস পিয়ারী, পরিচালক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, যান্ত্রিক যানের অতিমাত্রায় প্রসারের ফলে বায়ু ও শব্দ দূষণ বেড়েই চলেছে। আবার যাতায়াতের ক্ষেত্রেও অসহনীয় যানজট ও যত্রতত্র পার্কিং এ অনেকখানি জায়গা দখল করে রাখছে। ফলে হাঁটার জন্য জায়গা থাকছে না, শিশুদের খেলাধুলার জন্য মাঠ-পার্কও সংকুচিত।

এম এ মান্নান মনির, প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, তিনি বলেন, গত দুই দশকে ঢাকা শহরে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে অনেকগুলো উড়াল সড়ক এবং ফ্লাইওভার তৈরি করা হলেও, সকল নাগরিক সমানতালে সুবিধা পাবে এমন অবকাঠামোর নজির খুবই কম। তাই সাধারণ জনগণ যাতে সুবিধা পায় সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্র প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান। তিনি শিশুদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার আমাদের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়াও সংক্ষিপ্ত হাঁটা পথগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি বর্জন করেও কার্বন নিঃসরন রোধ করতে পারি।

ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্ট থেকে জনাব প্রফেসর ড. অনুপম হোসেন, পাবলিক হেলথ এন্ড কমিউনিকেশন স্পেশালিষ্ট বলেন, ঢাকা শহরের যানজট ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ। আমাদের কর্মঘণ্টা নষ্ট করছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে আমরা অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, জ্বালানি সংকট ও শহরের তীব্র যানজটের জন্য প্রধানত দায়ী ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি। জ্বালানি সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে অযান্ত্রিক যানের ব্যবহার। এতে করে নগরের যানজট কমে আসবে, দূষণ হ্রাস ও হাঁটার পরিবেশও উন্নত হবে।

এলাকার স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখার বিষয়ে মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটির সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার মিয়া বলেন, আমাদের পরিবেশ ও নগর রক্ষায় নিজেদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি বৃদ্ধির কারণে যেসব সমস্যা হয় তা আমরা প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা যানযটে আটকে থেকে বুঝতে পারছি। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে গণপরিসরের সংকট ও খেলাধুলার অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু-কিশোররা।

এছাড়াও আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটি, মোহাম্মদী ইয়ুথ ক্লাব, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স, লোকাল ফিউচার, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ইত্যাদি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন