
খুলনায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে দুই যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে নগরীর নিরালা তালুকদার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন— খুলনা নগরীর নিরালা এলাকার আলম শেখের ছেলে মনির ও সিরাজ শেখের ছেলে হানিফ। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে করে ১৫-২০ জন দুর্বৃত্ত নিরালা ১৯ নম্বর রোডে পৌঁছে মনির ও হানিফের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা লক্ষ্য করে গুলি চালালে দুই যুবক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, দুজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার খবর পেয়ে খুলনা সদর থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই এ হামলা হতে পারে। তিনি বলেন, “মাদকের বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে দু’জন আহত হয়েছেন। আহত মনিরের বিরুদ্ধে দুটি মাদকের মামলা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিরালা এলাকায় সম্প্রতি মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এই গুলির ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না আতঙ্কের কারণে।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “প্রায়ই রাতের দিকে মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক ঘুরে বেড়ায়। তারা কারও সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই সংঘর্ষ শুরু হয়। এলাকাটা এখন বেশ অশান্ত।”
এদিকে, এ ঘটনায় এলাকাবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা পুলিশের কাছে নিয়মিত টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং শিগগিরই হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
খুলনা মহানগরীতে গত কয়েক মাসে গুলির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটতে পারে।
বর্তমানে আহত মনির ও হানিফ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাদের শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে, তবে অবস্থার উন্নতি হয়নি।
পুলিশ বলছে, হামলার পেছনে কারা জড়িত, তা উদঘাটনে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের ধরতে একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।
সিএনআই ডেস্ক। ২০২৫