
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন।তবে তার এই দাবিকে মিথ্যা বলছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।
ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি…কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড, কসোভো ও সার্বিয়া, কঙ্গো ও রাওয়ান্ডা…পাকিস্তান ও ভারত, ইসরায়েল ও ইরান, মিশর ও ইথিওপিয়া এবং আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।’
ডিডাব্লিউ ফ্যাক্ট চেক থেকে বলা হয়, ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে সাতটি সংঘাত থামিয়েছেন। বাস্তবে তার তালিকাভুক্ত অনেক সংঘাতের কোনো সমাধান হয়নি এবং এখনো পরিস্থিতি টালমাটাল। অন্য কিছু বিরোধের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা বিবাদিত।
মিসর ও ইথিওপিয়া কখনই ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময় যুদ্ধে জড়ায়নি। তাদের বিরোধ ছিল ইথিওপিয়ার চারশ কোটি ডলারের রেনেসাঁ ড্যাম নিয়ে, যেখানে কায়রো ও খার্তুমের আশঙ্কা ছিল তারা নীল নদের জল কম পাবে। ২০২৫ সালের জুন মাসে আলোচনা ভেস্তে যায়। ট্রাম্প ঘোষিতভাবে মিশরের পক্ষে ছিলেন। তার জন্য মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফত্তেহ আল-সিসি তার প্রশংসাও করেন এবং ইথিওপিয়ার নেতারা তার বিরোধ করেন। ইথিওপিয়ার সঙ্গে মিশরের সংঘাত চরমে ওঠে এবং মিশর সোমালিয়াকে মদত দেয় বলে অভিযোগ।
সার্বিয়া ও কসোভো সরাসরি কোনো সংঘাতে জড়ায়নি। ট্রাম্প ২০২০ সালে যে চুক্তি করেছিলেন, সেখানে শান্তিপ্রতিষ্ঠা নয়, অর্থনৈতিক সম্পর্কই ছিল প্রধান। সার্বিয়া জানিয়েছিল, কসোভো আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। এবং সেখানে এখনো উত্তেজনা আছে, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষও হয়। ন্যাটোর শান্তিরক্ষী বাহিনী সেখানে মোতায়েন করা আছে। সার্বিয়া ও কসোভো নিজেদের মধ্যে শান্তিচুক্তিও করেনি।
ডিপিআর কঙ্গোয় ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২৪ সালে চুক্তি হলেও সহিংসতা এখনো জারি আছে।
বিশেষজ্ঞরা সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে, যে কোনো সময়ে তা আবার তুঙ্গে উঠতে পারে। ইসরায়েল ও ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা নতুন করে সংঘাত দিয়ে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি তাই তথ্যের তুলনায় ওভারস্টেটমেন্ট বা বাড়িয়ে বলার পর্যায়ে পড়ে।