১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলেও ডুবছে ঢাকা

শেয়ার করুন

জলাবদ্ধতা যেন রাজধানীর স্থায়ী নিয়তি। সামান্য বৃষ্টি হলেই অনেক এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। যানজট, দুর্ঘটনা, রাস্তার ধস, মানুষের দুর্ভোগ—সবই হয়ে উঠেছে নিয়মিত চিত্র। অথচ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন গত পাঁচ বছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে খরচ করেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ বিপুল অর্থ ব্যয়ের সুফল সাধারণ মানুষ তেমনটা অনুভব করতে পারেনি। বরং অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের নামে দেখানো হয়েছে কাজ, বাস্তবে হয়েছে তার অর্ধেক, কিংবা হয়নি মোটেও।

ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনায় সমস্যা নতুন নয়। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সম্ভাবনার শহরটি আজ পরিকল্পনাহীনতার ভারে জর্জরিত। তিলোত্তমা রাজধানী গড়ার জন্য সরকার ও সংস্থাগুলো একের পর এক উদ্যোগ নিলেও বাসযোগ্য নগর হিসেবে ঢাকার পরিচয় দিন দিন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। শহরের চারপাশের তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী একসময় ছিল ঢাকার স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশনের পথ। ছিল ৬৫টি খাল ও অনেক জলাশয়। অথচ বেপরোয়া দখল, ভরাট আর অবহেলার কারণে অধিকাংশ খালেরই অস্তিত্ব আজ হারিয়ে গেছে।

ঢাকায় ১৯১৭ সালে করা ব্রিটিশ নগর পরিকল্পনাবিদ স্যার প্যাট্রিক গেডিসের ‘ঢাকা টাউন প্ল্যান’ ছিল খালভিত্তিক পানি নিষ্কাশনের সুপরিকল্পিত একটি নকশা। সেখানে বলা হয়েছিল, ঢাকার খালগুলোই হবে বৃষ্টির পানি নদীতে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম। কিন্তু ১০৮ বছর পরও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং খাল দখল, নালা-নর্দমা ভরাট আর অপরিকল্পিত বক্স কালভার্টের কারণে পানি নামার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসা থেকে নালা ও খালের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের পুরো দায় এসে পড়ে করপোরেশনের ওপর। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ব্যয় করেছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা, আর উত্তর সিটি করপোরেশন খরচ করেছে ৪৫০ কোটি টাকা। খাল খনন, ড্রেনেজ উন্নয়ন, স্লুইসগেট সংস্কারসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেখানো হয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতার তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও নতুন এলাকা।

 

শেয়ার করুন