১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের অবসান হতে পারে ‘এই সপ্তাহে’: হোয়াইট হাউস

শেয়ার করুন

 

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া। চলতি ফেব্রুয়ারিতে এই যুদ্ধ তিন বছর পূর্ণ করেছে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ট্রাম্প ইউক্রেন সংঘাত বন্ধের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি এ বিষয়ে তৎপরতা আরও জোরদার করেছেন, এবং হোয়াইট হাউস জানিয়েছে—রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ‘এই সপ্তাহেই’ শেষ হতে পারে।

শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তির বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স (সিপিএসি) থেকে ফিরে সাউথ লনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,

“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার দল যুদ্ধের উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা এই সপ্তাহেই এটি সম্পন্ন করতে পারব।”

ট্রাম্প আগে দাবি করেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছে আর “কোনও বিকল্প নেই” এবং ভবিষ্যতের শান্তি আলোচনায় তাকে বাদ দেওয়া উচিত। তার এই মন্তব্যের পরেই হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দ্রুত চুক্তির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়।

খনিজ সম্পদ নিয়ে আলোচনা

শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে বিরল খনিজ সম্পদ চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র লেভিট বলেন,

“ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ এই চুক্তির একটি বড় অংশ। এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমেরিকান ট্যাক্স ডলার ফেরত আনতে সহায়তা করবে।”

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাট ওয়াল্টজ যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টও ইউক্রেনের সঙ্গে প্রস্তাবিত খনিজ বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইউক্রেনের সাড়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, ইউক্রেন দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তি গ্রহণ করবে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে তিনি বলেন,

“আমরা আশা করছি, শিগগিরই একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে, যা আমাদের ৪০ বা ৫০ হাজার কোটি ডলার ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।”

তিনি আরও বলেন,

“এটি একটি বড় চুক্তি, তবে ইউক্রেন এটি চায়। এটি আমাদের ইউক্রেনে উপস্থিত রাখবে এবং আমরা আমাদের অর্থ ফেরত পাবো। এই চুক্তি অনেক আগেই স্বাক্ষর হওয়া উচিত ছিল।”

বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজ পদার্থের সরবরাহ সীমিত এবং এসব খনিজ চীনেও রয়েছে। অস্ত্র, বৈদ্যুতিক গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে এই খনিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো চীনকে টেক্কা দিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওপর নজর দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

যদি আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটে এবং খনিজ সম্পদ চুক্তি বাস্তবায়ন হয়, তবে এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

শেয়ার করুন