
ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চার দিনব্যাপী (১৭-২০ ফেব্রুয়ারি) এই সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো, হত্যা, আহত বা মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যৌথ টহল বৃদ্ধি, তাৎক্ষণিক ও আগাম গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং সীমান্তবর্তী জনগণের জন্য জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে সম্মতি হয়।
এছাড়া, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা, কাঁটাতারের বেড়া বা প্রতিরক্ষামূলক বাংকার নির্মাণের আগে উভয় দেশের যৌথ পরিদর্শক দলের পরিদর্শন ও যৌথ আলোচনার দলিল (জেআরডি) অনুসরণ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ:
১. সীমান্ত হত্যার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা
সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যৌথ টহল বৃদ্ধি।
তাৎক্ষণিক ও আগাম গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়।
সীমান্ত হত্যার ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
2. সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ
যৌথ পরিদর্শক দলের পরিদর্শন ও জেআরডি অনুসরণ করে নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা।
সীমান্তবর্তী স্থগিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দ্রুত সমাধান।
3. সীমান্ত অপরাধ দমন
মাদক (ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা) ও গবাদিপশু পাচার রোধ।
স্বর্ণ, অস্ত্র, জাল মুদ্রা ও মানবপাচার রোধে তাৎক্ষণিক তথ্য বিনিময়।
4. সীমান্ত অতিক্রমজনিত ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো
অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম রোধে নজরদারি বৃদ্ধি ও জনসচেতনতা কার্যক্রম গ্রহণ।
5. মানবপাচার রোধ
মানবপাচার প্রতিরোধে উভয় দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ।
পাচার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার ও পুনর্বাসন।
6. সীমান্তবর্তী নদী ও খাল ব্যবস্থাপনা
আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তের ৪টি খালের দূষিত পানি শোধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর সাথে রহিমপুর খালের সংযোগ পুনরুদ্ধার।
7. সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়ন
পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন।
সীমান্তে যৌথ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালু রাখা।
বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্ত হত্যা রোধে বিএসএফের আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে অ-প্রাণঘাতী নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সীমান্ত অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।