
তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শেষ হয়েছে, যেখানে ডিসিরা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পেয়েছেন। সম্মেলনে সরকারের নীতিনির্ধারকরা ডিসিদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, কর আদায়, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং নির্বাচনে আইন প্রয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডিসিদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কাজ করার পরামর্শ দেন।
খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার পবিত্র রমজান মাসে সুশৃঙ্খলভাবে খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেন। তিনি জানান, মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রায় ৭ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে, যা ডিসিদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর আদায় বাড়ানোর ওপর জোর দেন, বিশেষ করে চিকিৎসক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কর সংগ্রহে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আত্মহত্যা, মাদকাসক্তি এবং বাল্যবিবাহের বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এ সমস্যাগুলো সমাধানে ডিসিদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন এবং ডিসিদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন দুর্নীতির খবর ধামাচাপা না দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পাহাড় কাটা রোধে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বন দখলমুক্ত করতে ডিসিদের সহায়তা চান।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং অরাজকতা রোধে ডিসিদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ডিসিদের নির্দেশ দেন।
সম্মেলনে মোট ৩৫৪টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যা মাঠ প্রশাসনে বাস্তবায়নের জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।