
ড. মুহাম্মদ ইউনূস: ‘নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছি’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে (ডব্লিউজিএস) এক প্লেনারি সেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “পুরোনো বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, তাই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা পর্যায় থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা পাচ্ছি।”
সিএনএনের উপস্থাপক বেকি অ্যান্ডারসন সেশনটি সঞ্চালনা করেন।
ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং দ্বিতীয় কাজ ছিল বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা। এজন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং একটি ঐকমত্য কমিশন সংলাপ এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব পালন করবে।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
উপস্থাপক বেকি অ্যান্ডারসনের এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার পর আমি আমার নিজস্ব কাজে ফিরে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আমরা খুশি। এতে গুম, খুন, টর্চার সেল এবং তৎকালীন সরকারের ভূমিকার বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে, যা বিশ্ববাসীকে বাস্তব চিত্রটি বুঝতে সাহায্য করবে।”
অর্থনীতি ও দুর্নীতি
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনামলে দেশের অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়েছিল। ব্যাংকিং ব্যবস্থা পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে, ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক থেকে লুট করা হয়েছে এবং প্রতিবছর ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি। তৎকালীন সরকার ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে ছিল।”
সামাজিক ব্যবসা
সামাজিক ব্যবসার প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “সামাজিক ব্যবসার মূল লক্ষ্য হলো সমাজের সমস্যা সমাধান করা। এটি শুধুই মুনাফার জন্য নয়, বরং সমাজের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে।”