
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে হামাসের বন্দি মুক্তি স্থগিত, গাজায় ফের যুদ্ধের হুমকি ইসরায়েলের
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে গাজায় আটক থাকা বন্দিদের মুক্তি ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য স্থগিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর জবাবে গাজায় ফের যুদ্ধ শুরুর হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যদি শনিবারের মধ্যে হামাস বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরায়েল আবারও গাজায় যুদ্ধ শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে তিনি বলেছেন,
> “যদি শনিবার দুপুরের মধ্যে হামাস আমাদের বন্দিদের ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাবে এবং হামাস পুরোপুরি পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী তীব্র লড়াই চালিয়ে যাবে।”
যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়, যার মধ্যে বন্দি বিনিময়, স্থায়ী শান্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মূল বিধান লঙ্ঘন করেছে, যার ফলে চুক্তির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা বলেছেন,
> “শত্রুপক্ষ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং শর্ত মানেনি। তবে হামাস সব বাধ্যবাধকতা মেনে চলেছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফেরাতে বিলম্ব করছে, গাজায় মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত করছে এবং নিরপরাধ মানুষের ওপর গুলি চালাচ্ছে।
বন্দি বিনিময়ের বর্তমান অবস্থা
এ পর্যন্ত চুক্তির আওতায় হামাস ২১ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যার মধ্যে ১৬ জন ইসরায়েলি এবং ৫ জন থাই নাগরিক। বিনিময়ে ৫৬৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপে মোট ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দি এবং ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময় হওয়ার কথা। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, বন্দি তালিকায় থাকা ৩৩ জনের মধ্যে ৮ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪৮ হাজার ২১৯ জনে পৌঁছেছে, জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী,
গাজার ৮৫% ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
৬০% অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় গাজায় নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে।