
পৃথিবীর নির্মম বাস্তবতা ও পরকালের গুরুত্ব
পৃথিবীর কঠিন বাস্তবতা হলো, এখানে কেউ চিরস্থায়ী নয়। একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে। ইতিহাসে কেউ অমর হয়নি, আর হবেও না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, যদিও তোমরা কোনো শক্ত ও সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করো।” (সূরা নিসা: ৭৮)
যেহেতু মৃত্যু অনিবার্য, তাই ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষণস্থায়ী এই জীবনের চেয়ে পরকালীন জীবনই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। দুনিয়ার জীবনকে পরকালের শষ্যক্ষেত্র বলা হয়েছে—এখানে যা অর্জন করা হবে, তার ফল মিলবে পরকালে।
পরকালের প্রস্তুতি ও গুরুত্ব
মৃত্যুর কথা স্মরণ করা একটি ইবাদত। রাসুল (সা.) বলেছেন—
“সবচেয়ে বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে মৃত্যুর জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে।” (ইবনে মাজাহ)
যে ব্যক্তি পরকালের কথা বেশি স্মরণ করে, তার অন্তর কোমল হয়, সে অন্যায় থেকে বিরত থাকে। অন্যদিকে, যারা পরকালের ব্যাপারে উদাসীন, তারা সহজেই পাপাচারে লিপ্ত হয়।
হজরত ওসমান (রা.) কবরস্থানে গিয়ে এতটাই কাঁদতেন যে তার দাড়ি ভিজে যেত। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন—
“কবর হলো আখেরাতের প্রথম ধাপ। যদি কেউ এখানে মুক্তি পায়, তাহলে পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হয়ে যায়। আর যদি মুক্তি না পায়, তাহলে সামনের পথ কঠিন হয়ে পড়ে।” (তিরমিজি)
দুনিয়া বনাম আখেরাত
দুনিয়ার তুলনায় আখেরাতের জীবন হলো বিশাল সমুদ্রের বিপরীতে এক ফোঁটা পানি। ইমাম গাজালি (রহ.) বলেছেন—
“দুনিয়াতে যতদিন থাকবে, সে অনুযায়ী পরিশ্রম করো। আর আখেরাতে যতকাল স্থায়ী হবে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নাও।”
আমরা পার্থিব জীবনে এত ব্যস্ত যে পরকাল নিয়ে ভাবার সময় পাই না। অথচ উল্টোটা হওয়া উচিত ছিল। প্রতিদিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা হয়তো এক ঘণ্টাও পরকালের জন্য ব্যয় করি না! অথচ এখানকার জীবন সামান্য, আর আখেরাতের জীবন চিরস্থায়ী।
সফলতার আসল মাপকাঠি
নবী-রাসুল ও আল্লাহর প্রিয় বান্দারা সবসময় পরকালের কথাই বেশি ভাবতেন। তারা দুনিয়ায় সফল হয়েছেন, কিন্তু কখনও দুনিয়ার মোহে হারিয়ে যাননি। সত্যিকারের সফল হতে চাইলে আমাদেরও আখেরাতের চিন্তা করতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরকালের জন্য প্রস্তুত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
এটি আপনার মূল বক্তব্য অক্ষুণ্ণ রেখে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রাঞ্জল ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করেছে। আপনি চাইলে আরও পরিবর্তন বা সংযোজন করতে পারেন!