
নথিবিহীন ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি সি-১৭ বিমান বেশ কয়েকজন ভারতীয়কে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তারা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্য থেকে ছেড়েছে, ভারতের কোথায় অবতরণ করবে এবং বিমানে কতজন ভারতীয় রয়েছেন—এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও জানা যায়নি। আইসিই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানটি আগামী ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর ভারতের ভূখণ্ডে পৌঁছাবে।
প্রাথমিকভাবে ১৮ হাজার নথিবিহীন ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ব্যাচকে এই বিমানে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে গত তিন দিনে ৫ শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গত ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ গ্রহণ করেন এবং একই দিনে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্যে ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামের একটি আদেশও ছিল। ট্রাম্পের আদেশে স্বাক্ষরের পর থেকে নথিবিহীন অভিবাসীদের ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করেন। দেশটির দল নিরপেক্ষ শীর্ষস্থানীয় থিঙ্কট্যাংক সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন মেক্সিকানরা। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে এল সালভাদর ও ভারত থেকে যাওয়া লোকজন। এই ভারতীয়দের মধ্যে বৈধ ও অবৈধ উভয় ধরনের অভিবাসী রয়েছেন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য বলছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার নথিবিহীন ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করছেন।
নথিবিহীন অভিবাসীদের ধরতে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযান শুরুর পর গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছিলেন, যেসব ভারতীয় বৈধ অনুমোদন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাদের গ্রহণ করতে ভারত প্রস্তুত। আইসিই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান অভিযানে বিভিন্ন দেশের অন্তত ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।