
এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি তাদের মেয়েকে শিশুসুলভ চেহারা বজায় রাখার জন্য জোরপূর্বক কঠোর ডায়েট অনুসরণ করানোর অভিযোগে শিশু নির্যাতনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম **দ্য মিরর ইউএস** এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী একজন ব্যালেরিনা। তার বাবা-মা তাকে নাচের জন্য কঠোর ডায়েট মেনে চলতে বাধ্য করতেন, যা শিশু নির্যাতনের শামিল। এই কঠোর ডায়েটের কারণে মেয়েটি বয়সের তুলনায় অস্বাভাবিক রকমের দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়। চিরকাল তরুণ দেখানোর নেশায় বাবা-মা তাদের বিবেক হারিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের একটি শহরে বসবাসকারী এই দম্পতির বিরুদ্ধে তাদের সন্তানকে বয়স অনুপাতে পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের মেয়ের বয়স যখন ১৬ বছর, তখন তার ওজন ছিল মাত্র ২৭ কেজি। মেয়েটি এতটাই দুর্বল ও রোগা হয়ে পড়ে যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং ফিডিং টিউবের মাধ্যমে খাবার দেওয়া হয়। এমনকি, মেয়েটির বাবা তার জন্ম সনদের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে তাকে কাগজে-কলমে কম বয়সী দেখানো যায়।
১৬ বছর বয়সে মেয়েটিকে প্রি-স্কুল বয়সী শিশুদের পোশাক পরিয়ে লোকজনের সামনে ছোট বাচ্চার মতো উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়। দম্পতিকে তাদের মেয়ের মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক বিকাশে ব্যর্থ হওয়ার জন্যও দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মেয়েটি জীবনের বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই পড়াশোনা করেছে এবং তাকে সমাজের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
মেয়েটির ব্যালে শিক্ষকরা যখন তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন, তখনই এই ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এরপর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আদালতকে জানানো হয় যে মেয়েটির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি, শারীরিকভাবে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে টয়লেট ব্যবহারের জন্য তার অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হতো।
বিচারক লিন্ডা ব্ল্যাক দম্পতিকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেন এবং রায় ঘোষণার সময় তাদের কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেন। বিচারক তাদের এই অমানবিক আচরণের জন্য কঠোর শাস্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।