১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার অজানা তথ্য জানালেন ড. ইউনূস

শেয়ার করুন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি, তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণের প্রেক্ষাপট নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স প্রধান গিডিয়েন র্যাচম্যানের উপস্থাপনায় একটি পডকাস্টে কথা বলেছেন। পডকাস্টটি ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়।

ড. ইউনূসকে গিডিয়েন র্যাচম্যান প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনার বাড়ির দিকে যখন ছাত্র-জনতা এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন এবং কী করছিলেন?” উত্তরে ড. ইউনূস জানান, “আমি তখন প্যারিসে ছিলাম, প্যারিস অলিম্পিক আয়োজনের দায়িত্বে। ওই দিন যখন আমার কাছে (উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে) প্রথম ফোন আসে, আমি হাসপাতালে ছিলাম, ছোট একটি অস্ত্রোপচারের জন্য। ফোনে খবর দেখতে দেখতে আমি ঘটনাগুলোর বিষয়ে জানছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “তারা (ছাত্ররা) জানায়, শেখ হাসিনা চলে গেছেন, এখন আমাদের সরকার গঠন করতে হবে। তারা আমাকে বলল, ‘আপনি আমাদের হয়ে সরকার গঠন করুন।’ আমি বলি, ‘না, আমি পারব না, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’ তারপরও তারা আমাকে বলল, ‘না, না, আপনাকে এখানে থাকতে হবে। আমরা অন্য কাউকে খুঁজে পাব না।'”

ড. ইউনূস জানান, তিনি ছাত্রদের বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা ছিল। “তারা আমাকে বলল, ‘না, আমাদের সময় নেই।’ এরপর আমি তাদের বলি, এক দিন চেষ্টা করতে, কিন্তু তারা রাজি হয়নি। পরে তারা আবার ফোন করে আমাকে রাজি করায়।” তিনি আরও বলেন, “তখন আমি বুঝলাম, ছাত্ররা অনেক কিছু করেছে, জীবন দিয়েছে, রক্তপাত হয়েছে—তাদের জন্য কিছু করা উচিত।”

অপারেশন শেষে হাসপাতালে নার্সের কাছ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, “ছাত্ররা আমাকে জানায়, সরকার গঠন করতে হবে, আপনি রাজি? আমি বলি, ‘হ্যাঁ, রাজি।’ এরপর কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। দুই ঘণ্টা পর, হাসপাতালের নার্স ফুলের তোড়া নিয়ে আসে এবং বলে, ‘আপনি যে প্রধানমন্ত্রী, আমরা জানতাম না।’ আমি তাকে বলি, ‘আপনি কীভাবে জানলেন?’ তিনি বলেন, ‘টিভি, প্রেসে সব জায়গায় এ খবর চলছে।'”

পরে, হাসপাতালের চিকিৎসকও ফুলের তোড়া নিয়ে শুভেচ্ছা জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়তে না চাইলেও, ড. ইউনূস জোর করে ছাড়পত্র নেন। হাসপাতালের পরিচালক তাকে সহায়তা করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা করেন।

ড. ইউনূস আরও বলেন, “পরদিন সকালে সবচেয়ে বেশি অবাক হই যখন ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর একটি দল আমাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যেতে আসে। আমি ভাবছিলাম, ‘মাই গড, আমার সঙ্গে কী হলো!'”

 

শেয়ার করুন