১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ই–কমার্স প্ল্যাটফর্মের ৬টিই চীনের

শেয়ার করুন

 

বিশ্বজুড়ে ই–কমার্স খাতে বিপ্লব ঘটছে। অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা, সহজ পেমেন্ট ব্যবস্থা ও দ্রুত ডেলিভারির কারণে এই খাত দিন দিন আরও প্রসারিত হচ্ছে। সম্প্রতি ব্যবসাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট বিশ্বের শীর্ষ ১০ ই–কমার্স প্ল্যাটফর্মের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে ১০টির মধ্যে ৬টিই চীনের প্ল্যাটফর্ম।

তালিকার শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন। জেফ বেজোসের প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালে ৭৯ হাজার কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে প্রায় ৩৯ কোটি মানুষ অ্যামাজনে কেনাকাটা করেন। সরাসরি বিক্রির পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের জন্যও এটি একটি বড় মার্কেটপ্লেস।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীনের তাওবাও, যা আলিবাবা গ্রুপের মালিকানাধীন। প্ল্যাটফর্মটি মূলত ভোক্তা থেকে ভোক্তাকেন্দ্রিক লেনদেনের জন্য জনপ্রিয়। ২০২৪ সালে তাওবাওয়ের মোট বিক্রয় মূল্য ছিল ৭২ হাজার ৩৮ কোটি ডলার এবং এর মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা প্রায় ৯৬ কোটি।

তৃতীয় স্থানে আছে আলিবাবার আরেকটি শাখা টি–মল, যা ব্যবসায়ী থেকে ভোক্তা লেনদেনে বিশেষায়িত। ২০২৪ সালে টি–মল ৬৮ হাজার ২৭ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করে এবং এর সক্রিয় ব্যবহারকারী প্রায় ১০০ কোটি।

চতুর্থ স্থানে পিনদুওদু, যা চীনের দ্রুতবর্ধনশীল মোবাইল–ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম। কম দামে কেনাকাটার সুযোগের কারণে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০২৪ সালে পিনদুওদুর মোট বিক্রি ছিল ৭১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার এবং ব্যবহারকারী সংখ্যা ৭২ কোটির বেশি।

পঞ্চম স্থানে রয়েছে জেডি ডটকম, যা সরাসরি পণ্য বিক্রি ও হোম ডেলিভারির জন্য পরিচিত। ২০২৪ সালে এর বিক্রি দাঁড়ায় ৫০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, এবং মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী প্রায় ৪০ কোটি।

ষষ্ঠ স্থানে টেমু, যা পিনদুওদুর মূল কোম্পানির অধীন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে এটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ২০২৪ সালে টেমুর বিক্রয় মূল্য ছিল ৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার, এবং মাসিক ব্যবহারকারী সংখ্যা ২৯ কোটি।

চীনের পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ই–বে সপ্তম স্থানে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে অন্যতম পুরোনো এই প্ল্যাটফর্মে ১৩ কোটির বেশি সক্রিয় ক্রেতা রয়েছে। ২০২৪ সালে ই–বে ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে।

অষ্টম স্থানে রয়েছে ওয়ালমার্ট, যা অফলাইন বাজারের পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটায়ও সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২২ সালে এর অনলাইন বিক্রয় ছিল ১১ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার, আর সক্রিয় ব্যবহারকারী ১৬ কোটি ৬০ লাখ।

নবম স্থানে শপিফাই, যা মূলত বিক্রেতাদের জন্য অনলাইন স্টোর তৈরি করার প্ল্যাটফর্ম। প্রতিদিন ৪৬ লাখ সক্রিয় ব্যবহারকারী ও ৮৭ কোটির বেশি ইউনিক ক্রেতা এর মাধ্যমে কেনাকাটা করেন।

দশম স্থানে রয়েছে দুইন (চীনে টিকটক নামে পরিচিত)। লাইভস্ট্রিম ও ভিডিওর মাধ্যমে পণ্য বিক্রির নতুন ধারা তৈরি করেছে এটি।

বিশ্ব ই–কমার্সের মানচিত্রে এখন চীনের আধিপত্য স্পষ্ট। প্রযুক্তি, ডিজিটাল পেমেন্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–নির্ভর বাজারের কারণে দেশটি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতের বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন ভারসাম্য তৈরি করবে।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন