১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমাধানহীন বৈঠক, আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষকরা

শেয়ার করুন

বাড়িভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী শিক্ষকরা শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকেও সমাধান না পেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, “বৈঠকটি ছিল কেবল সময়ক্ষেপণমূলক—আমরা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি পাইনি। তাই আন্দোলন চলবে।”

দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৬ জন শিক্ষক নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন, অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আবু তালেব সোহাগ, নুরুল আমিন হেলালী, আবুল বাশার, তোফায়েল সরকার, শান্ত ইসলাম, হাবিবুল্লাহ রাজু, মিজানুর রহমান, মিজানুর রহমান মাহিন, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, রবিউল ইসলাম ও মো. রকিবুল হাসান রাসেল প্রমুখ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে, তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একবারে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি সম্ভব নয়; ধাপে ধাপে তা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাতাসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা গত রোববার থেকে রাজধানীতে লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রথমে অবস্থান নিলেও পুলিশি বাধা, লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহারের পর তারা সেখান থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।

পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে তারা শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের উদ্দেশে মিছিল বের করলে হাইকোর্টের মাজারসংলগ্ন গেটে পুলিশ তা আটকে দেয়। পরে সেখানে রাত পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলে। বুধবার সকাল থেকে আবারও শিক্ষকরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে দাবি আদায়ে শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন। বিকেলে তারা ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন এবং সেখান থেকে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “সরকার যদি দ্রুত দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা যমুনা সেতুর দিকে পদযাত্রা করব। সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।”

সরকারি সূত্র বলছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে আবারও বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে আন্দোলন অব্যাহত রাখায় সারাদেশে শিক্ষা কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে। অনেক স্কুল–কলেজে ক্লাস বন্ধ রয়েছে, শিক্ষার্থীরাও অনিশ্চয়তায়।

শিক্ষকরা বলছেন, “বছরের পর বছর আমরা বৈষম্যের শিকার। সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অর্ধেক সুবিধা পান। আমাদের দাবি ন্যায্য—সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন না করলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন