১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : গোলাম পরওয়ার

শেয়ার করুন

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের নারী-পুরুষ, শিশু এবং আলেম-ওলামার ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, দেশের জনগণ আর এমন খুনি এবং ফ্যাসিস্ট ব্যক্তিকে রাজনীতিতে কোনো নৈতিক বা আইনগত অধিকার দেবে না।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ভোলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে আবেদন জানাচ্ছি—সংস্কারের দাবি উঠেছে, আমরাও সংস্কার চাই। তবে রাষ্ট্রের সব বিভাগে এত অল্প সময়ে সংস্কার সম্ভব নয়। একটি নির্বাচিত সরকার, জনগণের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সংস্কার হতে হবে। তবে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে, পুলিশ, ইলেক্ট্রোরাল সিস্টেম, বিচার বিভাগ, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। এক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি পুনরায় সৃষ্টি হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে এবং সংস্কারের বিরোধিতা করছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এবং তা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে একসাথে হতে হবে। তাদের এসব বক্তব্যের মধ্যে আমরা অন্য উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছি, তারা যেন একইভাবে বাক্স ভর্তি করতে চায়, যেভাবে আগের নির্বাচনগুলো হয়েছিল।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ৯টি মেগা প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে।’

তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসকে একটি কালো যুগ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, এই সময়কালে দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার এবং বিচারিক সুবিচারের অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা পরিকল্পিতভাবে ইসলামী মূল্যবোধ এবং জাতিসত্ত্বাকে ধ্বংস করেছে।

জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক অবদান ছিল, তবে আমরা গত ৩টি নির্বাচনের সুষ্ঠু প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে পারিনি। আমাদের দেশের তরুণ ছাত্ররা তাদের জীবন দিয়ে আন্দোলন সফল করেছে।’

তিনি অবশেষে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র চলছে। যারা আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে, তাদের মধ্যেও ফ্যাসিবাদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এই পথটি সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার দিকে এগিয়ে যাব।’

কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর ভোলা জেলা আমির মুহাম্মদ জাকির হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

 

শেয়ার করুন