
ঠাণ্ডা পড়লে নানা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন সর্দি-জ্বর, কাশি থেকে শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়া পর্যন্ত। শীতের তীব্রতায় অনেক সময় শিশু ও বয়স্ক মানুষ জীবন হারান, কারণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে সামান্য অস্বস্তি থেকেও মৃত্যু হতে পারে।
তাহলে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য প্রতিদিনের নিয়মিত জীবনযাপন, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং যোগব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে বিশেষভাবে কার্যকর কিছু যোগাসন ও প্রাণায়াম রয়েছে, যেমন:
যোগাসনগুলো:
1. উত্তানাসন বা পদহস্তাসন
2. অধোমুখ স্বনাসন
3. অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন
4. সেতুবন্ধাসন
5. উষ্ট্রাসন
6. সালম্ব শীর্ষাসন
7. হলাসন
8. বিপরীতকরণী
9. ধনুরাসন
10. শবাসন
এই যোগাসনগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, রক্তসঞ্চালন সুষম করতে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক।
প্রাণায়াম: বিশেষত, সূর্য অনুলোম-বিলোম প্রাণায়াম শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।
প্রাণায়াম পদ্ধতি:
1. পদ্মাসন, সিদ্ধাসন বা সুখাসনে বসে মেরুদণ্ড সোজা করুন।
2. ডান হাতের অনামিকা ও কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে বাম নাকের ছিদ্র বন্ধ করুন।
3. ডান নাক দিয়ে ধীরে শ্বাস গ্রহণ করুন এবং একইভাবে শ্বাস ত্যাগ করুন।
4. এইভাবে ৩-৫ মিনিট অনুশীলন করুন। এটি শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং মেদ কমাতে সহায়ক।
কপালভাতি প্রাণায়াম: প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় খালি পেটে এই প্রাণায়ামটি মাত্র ১ মিনিট চর্চা করলেই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা এবং অন্যান্য মারণরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
কপালভাতি প্রাণায়ামের প্রক্রিয়া:
1. সিদ্ধাসন বা পদ্মাসনে বসে হাত দুটো হাঁটুর ওপর রাখুন।
2. বুক ভরে শ্বাস গ্রহণ করুন, তারপর সজোরে শ্বাস ত্যাগ করুন।
3. শ্বাস ত্যাগের সময় পেট গভীরে ঢুকবে, শ্বাস গ্রহণের সময় পেট ফুলবে।
4. মনোযোগ রেখে শ্বাস-প্রশ্বাসে কার্যকরভাবে অনুশীলন করুন।
5. যদি কোনো ব্যথা অনুভব করেন, তখন বিশ্রাম নিয়ে আবার শুরু করুন।
6. ১ থেকে ২ মিনিট অনুশীলন যথেষ্ট, তবে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ৫-১০ মিনিট করে প্রতিদিন করুন।
সতর্কতা: অসুস্থ শরীর, গর্ভাবস্থা, মাসিক চলাকালীন বা অস্ত্রোপচারের পর এই প্রাণায়াম করা উচিত নয়।
উপকারিতা: কপালভাতি প্রাণায়াম ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং শরীরকে শক্তিশালী রাখে। নিয়মিত অনুশীলন করলে এটি আপনাকে সুস্থ ও উদ্যমী রাখবে।