
দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসানে অবশেষে রোববার সকাল থেকে গাজায় কার্যকর হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বন্দিদের মুক্তির চুক্তি অনুমোদনের পর স্বস্তির আশায় দিন গুনছেন ফিলিস্তিনিরা।
মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে চুক্তির ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল। শনিবার গাজার খান ইউনিসে একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শনিবার জেরুজালেম লক্ষ্য করে ইয়েমেন থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়। তারা দাবি করেছে, এই হামলা ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা চালিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানিয়েছেন, গাজার স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহের জন্য হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। সে সময় ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছিল।
শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, মন্ত্রিসভা জিম্মি ফেরত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। চুক্তিটি ইসরায়েলের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়েছে বলে তাদের দাবি। তবে হামাস বলেছে, ইসরায়েল তার উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং কেবল যুদ্ধাপরাধ চালিয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপে ৭৩৭ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রত্যাহার করে বাস্তুচ্যুতদের তাদের বাসস্থানে ফেরার অনুমতি দেবে।
মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে কায়রোতে একটি যৌথ অপারেশন রুম স্থাপন করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, চুক্তির দ্বিতীয় পর্বে যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
এদিকে, গাজার ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বাসিন্দারা তাদের ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকেই যুদ্ধের অবসান এবং শান্তি স্থাপনের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আশা প্রকাশ করছেন।