
ক্লান্তি মেটাতে ম্যাট্রেস: আরাম নাকি বিপদ?
কর্মব্যস্ত দিনের শেষে ক্লান্ত শরীরটাকে একটু আরাম দিতে বিছানা যেন এক টুকরো স্বর্গের মতো। বর্তমান যুগে ম্যাট্রেসের ব্যবহার আরামের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তবে, এই আরামের সঙ্গী ম্যাট্রেস আপনার অসতর্কতায় বিপদের কারণও হয়ে উঠতে পারে।
পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই ম্যাট্রেস ব্যবহারের ফলে ডাস্ট মাইট এবং জীবাণুর সৃষ্টি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, অ্যালার্জি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়ে।
নরম ম্যাট্রেস: আরামের ফাঁদ?
অনেকেই মনে করেন, নরম ম্যাট্রেস আরামের জন্য উপযুক্ত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত নরম ম্যাট্রেস শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে:
- নরম ম্যাট্রেস শরীরকে পর্যাপ্ত সমর্থন দিতে পারে না।
- কোমর, পিঠ, ঘাড় ও জয়েন্টের ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে।
- শক্ত ম্যাট্রেসও শরীরের জন্য অনুপযুক্ত।
পুরোনো ম্যাট্রেসের ঝুঁকি
দীর্ঘদিন একই ম্যাট্রেস ব্যবহারের ফলে এর গুণগত মান নষ্ট হয়। তাতে জমে থাকা ধুলো, ডাস্ট মাইট, ও জীবাণু অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট বাড়াতে পারে। আর্দ্র পরিবেশে এসব জীবাণু আরও দ্রুত বৃদ্ধি পায়। রাতে এই জীবাণু বা মাইটের সংস্পর্শে এলে হাঁপানি, চুলকানি বা অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ে।
ম্যাট্রেস বদলানোর প্রয়োজনীয়তা কবে বুঝবেন?
পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, ম্যাট্রেস পরিবর্তনের সময় নির্ধারণে কিছু লক্ষণ দেখতে হবে:
- অস্বস্তি: ঘুম থেকে ওঠার পর যদি ঘাড়, পিঠ বা কোমরে ব্যথা অনুভব করেন।
- চুলকানি বা অ্যালার্জি: বিছানায় শোয়ার পর ত্বকে চুলকানি বা অ্যালার্জি হলে।
- অতিরিক্ত গরম: ম্যাট্রেসে শোয়ার পর গরম লাগলে।
- ক্লান্তি: পর্যাপ্ত ঘুমের পরও ক্লান্তি অনুভব করলে।
- ম্যাট্রেসের মান খারাপ হলে: দীর্ঘদিনের ব্যবহারে ম্যাট্রেসের কার্যকারিতা কমে গেলে।
ম্যাট্রেস কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল করবেন:
- উপাদান: উচ্চ মানের উপাদানে তৈরি ম্যাট্রেস বেছে নিন।
- কঠোরতা: খুব বেশি নরম বা শক্ত ম্যাট্রেস এড়িয়ে চলুন।
- স্বাস্থ্যসম্মত: ধুলাবালি ও জীবাণু প্রতিরোধক ম্যাট্রেস কিনুন।
- পরিস্কারযোগ্যতা: ম্যাট্রেস নিয়মিত পরিষ্কারের উপযোগী কিনা যাচাই করুন।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য আরামদায়ক ও পরিষ্কার বিছানা অপরিহার্য। তাই ম্যাট্রেস ব্যবহারে সচেতন হন এবং প্রয়োজনমতো তা বদলে নিন।