১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার
৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেসবুকে থাকছে না আর ফেক্ট চেকার

শেয়ার করুন

মেটার নতুন সিদ্ধান্ত: ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে বন্ধ হচ্ছে ফ্যাক্ট চেকিং, চালু হচ্ছে কমিউনিটি নোট

ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে আর থাকছে না ফ্যাক্ট চেকার। সামাজিক মাধ্যমগুলোর মাদার কোম্পানি মেটা ঘোষণা দিয়েছে, তথ্য যাচাইয়ের কাজটি এখন থেকে ব্যবহারকারীরা ‘কমিউনিটি নোটস’ এর মাধ্যমে করবেন। এটি অনেকটাই ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্স (সাবেক টুইটার)-এর নতুন ব্যবস্থার মতো।

ফ্যাক্ট চেক বন্ধের কারণ

মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “ফ্যাক্ট চেকাররা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে উঠেছিল। তারা আস্থা অর্জনের চেয়ে বেশি আস্থা নষ্ট করেছে। মুক্ত মতামত ও ধারণা প্রকাশের সুযোগ বন্ধ করেছে।”

জাকারবার্গ আরও স্বীকার করেন, ফ্যাক্ট চেকার বন্ধ হওয়ায় তাদের প্ল্যাটফর্মগুলোতে ক্ষতিকর কনটেন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

রাজনৈতিক চাপ এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন

ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার মুখে ছিল মেটা। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার দল রিপাবলিকান পার্টি অভিযোগ করেছিল, ফ্যাক্ট চেকের মাধ্যমে ডানপন্থি মতামত সেন্সর করা হচ্ছে।

ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই মেটা তার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মাত্র একদিন আগে ট্রাম্পের সহযোগী ডানা হোয়াইট মেটার বোর্ডে যোগ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মেটা ১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে।

মেটার পরিবর্তনের পটভূমি

২০১৬ সালে মেটা প্রথম ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রাম চালু করেছিল। তখন অভিযোগ উঠেছিল, বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মেটার প্ল্যাটফর্মে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে মার্কিনিদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে।

বিশ্বের ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক, ২০২২ সালে টুইটার (বর্তমান এক্স) কিনে নেওয়ার পর ফ্যাক্ট চেকার দল বাদ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় মেটাও ফ্যাক্ট চেকার বাদ দিয়ে কমিউনিটি-নির্ভর তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে।

স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির পরিবর্তন

মেটা তাদের প্ল্যাটফর্মের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির নীতিমালায় পরিবর্তন আনছে।

অতীতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অপ্রয়োজনীয় অনেক কনটেন্ট মুছে ফেলা হয়েছিল।

এখন থেকে শুধু গুরুতর পলিসি ভঙ্গের বিষয়গুলো যেমন সন্ত্রাসবাদ, শিশুদের যৌন হয়রানি, মাদক ও প্রতারণার ওপর নজর দেওয়া হবে।

অন্যান্য বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

মেটার এই পরিবর্তন মুক্ত মত প্রকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তবে ক্ষতিকর কনটেন্ট বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। কমিউনিটি নোটস কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

 

শেয়ার করুন