১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার
৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল জাজিরা টিভির সম্প্রচার বন্ধ করল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

শেয়ার করুন

ফিলিস্তিনে আল জাজিরার সম্প্রচার স্থগিত: কারণ ও প্রতিক্রিয়া

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে কাতারের আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা-র সম্প্রচার স্থগিত করেছে। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, চ্যানেলটি “উস্কানিমূলক এবং বিভাজন সৃষ্টিকারী উপাদান” সম্প্রচার করছে। তবে এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে কার্যকর হবে না, যেহেতু গাজা সরাসরি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নেই।

কেন স্থগিত করা হলো?

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি, স্বরাষ্ট্র এবং যোগাযোগ মন্ত্রীরা যৌথভাবে আল জাজিরার কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে সিদ্ধান্তের বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিয়ে ওয়াফা বলেছে, আল জাজিরার সম্প্রচার “প্রতারণামূলক” এবং “বিবাদকে বাড়িয়ে দিচ্ছে”।

এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন গত সপ্তাহে ইসরায়েলি অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন ক্যাম্পে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনার খবর আল জাজিরা কভার করেছিল।

আল জাজিরার প্রতিক্রিয়া

আল জাজিরা এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি “অধিকৃত অঞ্চলের ঘটনা কভারেজ করতে নিরুৎসাহিত করার প্রচেষ্টা”। সংস্থাটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে এবং পশ্চিম তীরে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

ফাতাহ ও হামাসের অবস্থান

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহ অভিযোগ করেছে, আল জাজিরা “ফিলিস্তিনসহ আরব অঞ্চলে বিভাজন তৈরি করছে”। ফাতাহ ফিলিস্তিনিদের এই চ্যানেলের সহযোগিতা না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে, গাজায় শাসনকারী হামাস-এর ওপর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না। কারণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গাজায় তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না।

ইসরায়েলে আল জাজিরার নিষেধাজ্ঞা

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে আল জাজিরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে।

২০২3 সালে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রামাল্লায় আল জাজিরার ব্যুরোতে অভিযান চালায় এবং এটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।

২০২2 সালের মে মাসে, ইসরায়েল চ্যানেলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, এটিকে “ইসরায়েলি নিরাপত্তার জন্য হুমকি” হিসেবে উল্লেখ করে।

বিশ্লেষণ

আল জাজিরার সম্প্রচার স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত মিডিয়ার স্বাধীনতা ও ফিলিস্তিনের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পদক্ষেপ জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নেওয়া হয়েছে, তবে সমালোচকরা মনে করেন, এটি একটি প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। মিডিয়ার স্বাধীনতা রক্ষা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বচ্ছ এবং ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

 

শেয়ার করুন