১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেড় মাস পরিচালক নেই বার্ন ইনস্টিটিউটে

শেয়ার করুন

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পরিচালকের অনুপস্থিতিতে চরম অচলাবস্থা

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট দেড় মাস ধরে পরিচালকের অনুপস্থিতিতে চরম অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভূতপূর্ব পরিচালক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আওয়ালের অবসরের (১৮ নভেম্বর) পর থেকে নতুন কোনো পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। একইসঙ্গে কোনো কর্মকর্তাকে আয়ন-ব্যয়ন ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি, যার ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৫০ কর্মীর বেতনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

পরিচালক নিয়োগে জটিলতা

পরিচালক নিয়োগে বিলম্বের পেছনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)-এর সমর্থিত চিকিৎসকদের অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা বড় ভূমিকা রাখছে বলে জানা গেছে।

ডা. মারুফুল ইসলাম (যুগ্ম পরিচালক): বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি আয়ন-ব্যয়ন ক্ষমতা না পাওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

ডা. ফোয়ারা তাসমীম: চলতি দায়িত্বে অধ্যাপক হিসেবে পরিচালক পদে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ডা. নাসির উদ্দিন: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক, তিনিও পরিচালক হওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় স্থবিরতা

পরিচালক বা ডিডিওর অনুপস্থিতিতে ইনস্টিটিউটের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

বেতন সমস্যা: প্রায় ৬৫০ নার্স, ৫০ সরকারি কর্মচারী, ২৫০ চিকিৎসকের বেতন দুই মাস ধরে বন্ধ।

অস্ত্রোপচার সামগ্রী সংকট: অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের (যেমন সূক্ষ্ম সূতা, গজ, তুলা, ব্যান্ডেজ) সরবরাহ বন্ধ।

জরুরি ওষুধ সংকট: দগ্ধ রোগীদের প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সরবরাহ নেই।

চিকিৎসাসেবায় বিঘ্ন

অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রমও অর্ধেকে নেমে এসেছে।

আগে দিনে ১৫-২০টি অস্ত্রোপচার হতো; এখন তা ৮-১০টিতে নেমে এসেছে।

রোগীদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

ড্রেসিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় স্যালাইন রোগীদের নিজ উদ্যোগে কিনতে হচ্ছে।

পরিচ্ছন্নতা সংকট

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বেতন বন্ধ থাকায় অনেকেই চাকরি ছেড়ে গেছেন। পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, যা স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপজ্জনক।

পর্যবেক্ষণ

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অচলাবস্থা অবসানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষায়িত এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সচল রাখতে সরকারকে দ্রুত নতুন পরিচালক নিয়োগ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

শেয়ার করুন