
যমুনা নদীর ওপর প্রথম ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলওয়ে সেতু ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে চালু হবে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে সেতুটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু, ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে এবং সার্বিক অগ্রগতি ৯৮ শতাংশের বেশি।
সেতুর বিবরণ
সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার, যা পূর্ব রেলস্টেশন থেকে পশ্চিম রেলস্টেশন পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত। প্রকল্প পরিচালক বলেন, সেতুটি ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলওয়ে হিসেবে নির্মিত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেতুর প্যারামিটার পরিমাপ এবং স্ট্যাটিক লোড পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম ইতোমধ্যেই সফলভাবে শেষ হয়েছে।
প্রকল্পের ব্যয় ও তহবিল
সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রদান করেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা, এবং বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে।
নির্মাণ কাজ
২০১৬ সালে গৃহীত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দুটি জাপানি যৌথ উদ্যোগ সংস্থা। বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত এই সেতুটি গ্যাস পাইপলাইন সুবিধাসহ ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক সেতু হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। যদিও প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল, প্রকল্পের ভৌত কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের আগস্টে এবং ভিত্তি স্থাপন করা হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।
সেতুর সম্ভাব্য প্রভাব
নতুন এই রেল সেতুটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ উন্নত করবে, বাংলাদেশ রেলওয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং ট্রেনের সময়সূচি নির্ধারণে বিলম্ব কমাবে। নতুন সেতুটিতে দৈনিক ৮৮টি ট্রেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে, যেখানে যমুনা সেতুতে সর্বোচ্চ ২২টি ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা রয়েছে।
উদ্বোধনের পর সেতুটি দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।