১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেজিটেবল ফ্যাট দেখিয়ে কসমেটিক আনল, ধরা পড়ল সাদাফ

শেয়ার করুন

ক্রিম উৎপাদনকারী একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে স্কিন কেয়ার ক্রিম আমদানি করে সেটিকে ভেজিটেবল ফ্যাট হিসেবে ঘোষণা দেয় রাজধানীর চকবাজারের প্রতিষ্ঠান সাদাফ ট্রেডিং। এই মিথ্যা ঘোষণার বিষয়টি পরীক্ষণের সময় ধরা পড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্ট সেলের (সিআইসি) হাতে। কুয়েটে পাঠানো নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষায় প্রমাণ মেলে—ঘোষণা ছিল ভেজিটেবল ফ্যাট, কিন্তু চালানে ছিল স্কিন কেয়ার ক্রিম, পেট্রোলিয়াম জেলি এবং অন্যান্য কসমেটিক পণ্য। এতে সরকারের প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের একটি কসমেটিক কোম্পানি থেকে ভেজিটেবল ফ্যাট ঘোষণায় পণ্য আনে সাদাফ ট্রেডিং। উচ্চ শুল্কের পণ্য হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি কম কর দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভুল ঘোষণা দেয়। সন্দেহজনক চালান হওয়ায় কাস্টম হাউস আইসিডি কমলাপুর শুরু থেকেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখে। সিআইসির গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিল অব এন্ট্রি লকও করা হয়। পরবর্তীতে কুয়েটে পরীক্ষায় দেখা যায়—ভেজিটেবল ফ্যাটের পরিবর্তে ওই চালানে ছিল বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ও লোশন।

ভেজিটেবল ফ্যাটের মোট শুল্ককর ৩৯.৭৫%, আর ফেস ক্রিমের শুল্ক ১৬২.৫৬%। ফলে এক চালানেই ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কাস্টম বিভাগ। মিথ্যা ঘোষণার ক্ষেত্রে আইনে সমপরিমাণ বা দ্বিগুণ জরিমানার বিধান থাকায় মোট প্রায় ২০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে কাস্টম হাউস প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।

সাদাফ ট্রেডিংয়ের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান এন এম ট্রেডার্সের মালিক রফিক দাবি করেন, তারা ভেজিটেবল ফ্যাটই আমদানি করেছেন এবং ক্রিম ও ফ্যাট উভয়ই লিকুইড ধরনের হওয়ায় ঘোষণা নিয়ে ভুল হয়নি। তবে কুয়েটের পরীক্ষার পাশাপাশি বিসিএসআইআরে পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এনবিআর সূত্র আরও জানায়, সাদাফ ট্রেডিং পাকিস্তানের ইভান অ্যান্ড মায়ার নামের একটি কসমেটিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এই চালান আনে। অভিযোগ রয়েছে—এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি একই ধরনের চালান খালাস করেছে। এজন্য তাদের গত এক বছরের আমদানি, ভ্যাট এবং পণ্য বিক্রির তথ্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কাস্টম হাউস আইসিডির সহকারী কমিশনার খুশরিনা পারভীন জানান, কমিশনারের নির্দেশনায় চালানটি লক করা হয়েছে এবং সিআইসির পর্যবেক্ষণে কায়িক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বড় অঙ্কের শুল্ক ফাঁকি শনাক্ত হওয়ায় এখন চালানটি আটক রয়েছে।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন