
জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিককে কনুই দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক সভা শেষে ঘটনাটি ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গাড়িতে উঠতে গেলে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সিনিয়র সাংবাদিক ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মোদাব্বের হোসেনকে কনুই দিয়ে সরিয়ে দেন আবদুস সালাম। ভিডিওটি রোববার (২ নভেম্বর) ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ও সাংবাদিকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ রাজনীতিকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত অনভিপ্রেত। কেউ কেউ বলেন, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী এবং গণমাধ্যমের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, “তখন বিষয়টি খেয়াল করিনি। পরে ভিডিও দেখে পুরো ঘটনা বুঝতে পারি। তবে আবদুস সালাম ভাই ইতোমধ্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে অবস্থান জানানো হয়েছে। দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, “সালাম ভাই ঘটনাটি উপলব্ধি করে সঙ্গে সঙ্গেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে মোদ্দাবির ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বিষয়টি ক্ষমাসুন্দরভাবে দেখার অনুরোধ করেছেন।”
শায়রুল কবির আরও জানান, “মোদ্দাবির ভাইও সালাম ভাইকে বলেছেন, ভবিষ্যতে এমন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ যেন আরও সতর্ক থাকেন।”
ঘটনাটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের ভেতরেও আলোচনা চলছে। অনেকেই মনে করছেন, এমন অপ্রত্যাশিত আচরণ দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। যদিও আবদুস সালাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত এবং দলের দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সাংবাদিক মহল থেকে দাবি উঠেছে—দলীয় নেতাদের গণমাধ্যমের প্রতি আরও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, রাজনীতিবিদদের এমন আচরণ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিপন্থী এবং এটি অনিচ্ছাকৃত হলেও দুঃখজনক।
বিএনপি সূত্র জানায়, দলটি ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং নেতাদের আচরণে পেশাদারিত্ব ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
সিএনআই/২৫