
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিনের আহমদের গোপন প্রেম চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিজেদের গোপন প্রেমের কারখানা বানাবেন না।
রোববার (০২ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন এনসিপির এ নেতা।
এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলছি নির্বাচনে যেন কোনো দলের প্রতীক নমিনেশন বাণিজ্যের প্রতীক হতে না পারে। বিভিন্ন দল পয়সা দিয়ে অন্য দলকে যেন নিজেদের পকেটস্থ করতে না পারে সে জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে যে বিধান আনা হয়েছে নির্বাচন কমিশন যেন সে বিষয়ে স্ট্রিক্ট থাকে। আমরা সেই আহ্বান জানিয়েছি।
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে পাটওয়ারী বলেন, আপনারা শুনেছেন সালাউদ্দিন আহমদ আমাদের আইন উপদেষ্টা যিনি রয়েছেন, আসিফ নজরুল স্যারকে একটা চিঠি দিয়েছেন। সেখানে উনাদের গোপন প্রেমের কথা বলেছেন যে- আপনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আপনার আশ্বাস পেয়ে আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম বিভিন্ন দল জোট করলেও তাদের নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে সংবাদ এসেছে।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে যিনি রয়েছেন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যারা ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিজেদের গোপন প্রেমের কারখানা বানাবেন না। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো যে, আপনার উপদেষ্টামণ্ডলী যারা রয়েছেন, তারা যদি বিভিন্ন দলের সঙ্গে এ ধরনের গোপন প্রেম করে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যে যাত্রা, সেটা ব্যাহত হবে। গণতন্ত্র যাত্রার দিকে আমরা আপনাদের আহ্বান জানাবো সুসংহত আনতে সামনে যাওয়ার জন্য।
বিএনপির সঙ্গে জোট করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, আহ্বায়ক মহোদয় আজকেও আপনাদের সকালে একটা প্রেস মিটিং ছিল সেখানে আমরা স্পষ্ট করেছি আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো। এবং এটাও বলেছি যে ছোট দলগুলোর যে একটা সম্ভাবনা, বড় দলগুলো নিজস্ব প্রতীকের আন্ডারে যে কৃষ্টিকালচার বাংলাদেশে আছে, এটার মাধ্যমে নতুন কোনো দল সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়। আগামীর যে সংসদ হবে সেটাকে একদলীয় অর্থাৎ একটা দল কুক্ষিগত করার জন্য দুটো দলকে অল্প কিছু টাকা পয়সার বিনিময়ে দুই একটা সিটে নমিনেশন দেওয়ার বদলে তারা নিজকে পকেটস্থ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আগামীতে বিএনপি এবং জামায়েত যে বড় দলগুলো রয়েছে, সেখানে ‘শাপলা কলি’ ইনশাল্লাহ বড় ফাইটিং জোনে থাকবে। জনতার মধ্যে ইতোমধ্যেই শাপলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আবার শাপলার সঙ্গে কলিও যোগ হচ্ছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এটাকে নির্বাচন কমিশন বলতে পারি না বা ইলেকশন কমিশন বলতে এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি। এ ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে এসেছি এখানে অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে। সো ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনের জায়গা থেকে আমরা আমাদের ফাইটটা করে যাচ্ছি। ইলেকশন কমিশন এখনো যথেষ্ট স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। সোশ্যাল ওয়েতে মসজিদগুলো দখল চলছে। এবং জামায়াতে ইসলামীর যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ, এ ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তো আমরা সঙ্গী হতে পারব না। আবার বিএনপির যে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস; এটারও সঙ্গী হতে পারবো না। আমরা চাই দুটি দলের সঙ্গে সংসদে সবাই থাকি। সেখানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এগুলো না থাকুক। ধর্মীয় ফ্যাসিবাদও না থাকুক। একটি সুন্দর বাংলাদেশ আমরা প্রত্যাশা করি। সেই প্রসেস বা জায়গাটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা বলেছিলাম যদি বিএনপি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এগুলো ছেড়ে আসে এবং সংস্কারে তারা পক্ষে থাকে সেটাও আমরা ভেবে দেখব। আর যদি জামায়াত ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ এবং ধর্মীয় যে বিভাজনের রাজনীতি বাংলাদেশে করছে, সে জায়গা থেকে যদি সরে আসে সেটা আমরা ভেবে দেখব। তবে আমরা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাই। বিএনপি যদি এখানে সরে আসতে পারে তাহলে সেখানে ইনশাআল্লাহ কথা হতে পারে।
গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, গণভোট নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। আমরা দুই দলের কাছে আহ্বান রাখবো, যে আপনাদের এ ধরনের যুদ্ধ নির্বাচনকে ব্যাহত করবে। নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য দুই দলকে আহ্বান জানাবো, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ ধরনের গণভোটের সময়টা নিয়ে কুতর্ক থেকে আপনারা নিজেদের এড়িয়ে চলুন। গণভোট আগে দিলে যে উপকারিতা, গণভোট ইলেকশনের দিন দিলে একই উপকারিতা।