১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা হচ্ছে

শেয়ার করুন

মব সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে দেশের জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণের মূলভিত্তি তথা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮১ জন শিক্ষক।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) যৌথ বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেছেন, ‘শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা হচ্ছে। এ যেন সভ্যতার বিরুদ্ধে এক অঘোষিত যুদ্ধ।’

গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার অদূরে সাভারে আশুলিয়ার খাগান এলাকায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পরেই শিক্ষকরা যৌথ বিবৃতিতে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানান।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন , অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক ড. শবনম জাহান, অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ খান, অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূঁইয়াসহ আরও অনেকে।

তারা বলেন, ‘ধারাবাহিক বর্বরতার সাম্প্রতিক উদাহরণ হল, সাভারের সিটি ইউনিভার্সিটিতে অগ্নিসংযোগের নৃশংস ঘটনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া মানে শুধু একটি ভবন ধ্বংস নয়, এটি জাতির বিবেক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও ভবিষ্যৎকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার দুঃসাহসিক চেষ্টা।’

বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, ভাষা আন্দোলনের প্রতীক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ধারাবাহিকতা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে উল্লেখ করেন তারা।

তারা বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও বুদ্ধিবৃত্তিক মেরুদণ্ডকে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দেওয়া।’  শিক্ষকরা বলেন, ‘একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক ও অন্ধকারাচ্ছন্ন শক্তি আজ সংগঠিতভাবে উচ্চশিক্ষা, সংস্কৃতি, মুক্তচেতনা ও মানবিকতার শেকড়ে আঘাত হানছে।’

শিক্ষাঙ্গনে মব সন্ত্রাস বন্ধ করার পাশাপাশি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান শিক্ষকরা।

শেয়ার করুন