
বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধি করল অন্তর্বর্তী সরকার, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আশা প্রকাশ করেছেন, বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা বাস্তবায়নের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা নব উদ্যমে শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মূল বেতনের সাড়ে সাত শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি আগামী বছরের জুলাই মাস থেকে আরও সাড়ে সাত শতাংশ বাড়ানো হবে। ফলে আগামী জুলাই থেকে তাঁরা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়িভাড়া পাবেন। তবে কারও বাড়িভাড়া দুই হাজার টাকার কম হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ন্যূনতম তিন হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসবভাতা ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। ১২ অক্টোবর থেকে তাঁরা ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন, যা শিক্ষাঙ্গনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছিল। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ঘোষণা আসার পর আন্দোলনকারীরা আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করেছেন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টার সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। আলোচনায় শিক্ষক–কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায়গুলো পর্যালোচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবি যৌক্তিক। তবে বাস্তবতা হলো—১৫ বছরের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটে দেশের অর্থনীতি বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তবে এখনই মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য তৈরি হয়নি। তাই বাস্তবতার নিরিখে ধাপে ধাপে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“আমি আশা করি আন্দোলনরত শিক্ষকেরা এখন নব উদ্যমে শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন। শিক্ষকরাই জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতা। তাঁদের উৎসাহিত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ তৈরি করাই সরকারের দায়িত্ব।”
তিনি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষক মহলে স্বস্তির সঞ্চার হয়েছে বলে জানা গেছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সরকারের প্রতি আস্থা রেখে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছেন। তবে বাকি দাবিগুলোও শিগগির বাস্তবায়নের আশায় আছেন।
সিএনআই/২৫