
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আওয়াল বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে যদি বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে, তবে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের কারিকুলামে খেলাধুলাকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’ শিক্ষা ও ক্রীড়া একসঙ্গে এগিয়ে গেলে একটি সুস্থ, মেধাবী ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের দেবীনগর হাইস্কুল মাঠে প্রগতি সংঘ আয়োজিত এক ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তাবিথ আওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন দেশের ফুটবল উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবল প্রতিভা খুঁজে বের করাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। স্থানীয় টুর্নামেন্টগুলোতে স্পন্সর আসছে। এটি ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এসব ছোট টুর্নামেন্ট থেকেই জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় বাছাই করা হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটি থেকেই জাতীয় দলের মানসম্পন্ন খেলোয়াড় উঠে আসবে বা পাওয়া সম্ভব।’
বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘তৃণমূলের কোচ, সংগঠক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খেলাধুলা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সবার সম্মিলিত উদ্যোগেই খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি হবে এবং সেখান থেকেই গড়ে উঠবে ভবিষ্যতের তারকা খেলোয়াড়রা।’
খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। এ সময় মাঠজুড়ে আনন্দ-উল্লাসে ভরে ওঠে দেবীনগর বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। এছাড়াও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক সামিরুল ইসলাম পলাশ, সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, চূড়ান্ত খেলায় মুখোমুখি হয় দেবিনগর আদর্শ যুব উন্নয়ন সংস্থা ফুটবল দল ও শুভ ফুটবল ক্লাব শাহজাহানপুর। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় ১-০ গোলে জয় পায় দেবিনগর আদর্শ যুব উন্নয়ন সংস্থা। টুর্নামেন্টে মোট ১৬টি দল অংশ নেয়, যা স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। প্রত্যন্ত এই জনপদে ফুটবল খেলা ঘিরে দর্শকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় উৎসবের আমেজ। মাঠজুড়ে প্রায় ১৫ হাজার দর্শকের উচ্ছাসে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গ্রামীণ ক্রীড়াঙ্গণ।
খেলা শেষে দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা জানান, এমন আয়োজনে তারা ভীষণ খুশি এবং আরও বেশি এ ধরনের টুর্নামেন্ট দেখতে চান। দর্শকদের দাবি, তৃণমূল পর্যায়ে আরও খেলার মাঠ তৈরি করা হোক, যাতে তরুণরা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত থাকতে পারে, মাদক থেকে দূরে সরে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
আয়োজকরা বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত করা হলে তরুণরা ক্রীড়ায় অনুপ্রাণিত হবে। আয়োজক প্রগতি সংঘের সভাপতি মামুনুর রশিদ জানান, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজন করা হবে, যাতে স্থানীয় ফুটবল আরও সমৃদ্ধ হয় এবং জাতীয় পর্যায়ে খেলোয়াড় তুলে ধরতে পারেন। এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত রাখা এবং ভবিষ্যতের প্রতিভা খুঁজে বের করাই তাদের মূল লক্ষ্য।’
মাঠের খেলা, দর্শকের উচ্ছ্বাস আর আয়োজকদের অঙ্গীকারে দেবিনগরের টুর্নামেন্টটি হয়ে উঠেছিল এক উৎসবমুখর ক্রীড়া আসর।